পল্লী উন্নয়ন একাডেমির ভূমিকা নিয়ে মন্ত্রীর প্রশ্ন

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ রোববার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

সরকারের পল্লী উন্নয়ন একাডেমিগুলোর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব কার্যক্রম চালাচ্ছে, তা পর্যাপ্ত কি না, তা মূল্যায়ন করতে হবে। দেশের উন্নয়নে একাডেমিগুলো কতটা ভূমিকা রাখতে পারছে, সেটা বিবেচনা করতে হবে। একাডেমিগুলোর নিজস্ব আয় বাড়াতে কী করা যায়, তা-ও অনুসন্ধান করতে হবে।

আজ রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে পল্লী উন্নয়ন একাডেমির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ), বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড) ও জামালপুরের শেখ হাসিনা পল্লী উন্নয়ন একাডেমির কর্মকর্তারা অংশ নেন।

নতুন মন্ত্রিসভায় পুনরায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন তাজুল ইসলাম। পল্লী উন্নয়ন একাডেমিগুলোর কার্যক্রম, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে মতবিনিময় সভায় অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

সভার শুরুতে নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন কুমিল্লায় অবস্থিত বার্ডের মহাপরিচালক হারুন-অর-রশিদ মোল্লা। সংস্থাটির আয়-ব্যয় অংশে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে পরিচালন ব্যয় ছিল ৩৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে পরিচালন ব্যয় ৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এ সময় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানতে চান, এই ব্যয়ের পুরোটা সরকার দেয় কি না।

পরিচালন ব্যয়ের পুরোটা সরকার দেয় জানার পরে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেদের চলার জন্য টাকা উপার্জনে আপনারা কী করেন? এমন কোনো কার্যক্রম আছে কি না? অন্য দেশে পল্লী উন্নয়ন একাডেমিগুলো নিজেরা আয় করে কীভাবে? আপনারা যে কাজ করেন, এর চেয়ে ভালো করার সুযোগ ছিল।’

এই আলোচনার মধ্যে বার্ড তাদের পুরো উপস্থাপনা শেষ করতে পারেনি। এরপর বগুড়ায় অবস্থিত আরডিএ চর এলাকার উন্নয়নে নিজেদের নেওয়া কার্যক্রমের বর্ণনা দিয়ে উপস্থাপনা শুরু করে। তারা চর এলাকার চাষিদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা তুলে ধরে। মন্ত্রী তাজুল ইসলাম প্রশ্ন করেন, ‘এই উদ্যোগ নেওয়ার আগে কোনো গবেষণা করেছেন? যে ভুট্টা উৎপাদিত হচ্ছে, তা স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা নিশ্চিত করা হয়েছে? যেসব গবেষণা করছেন, সেগুলোর ফলাফল কী হচ্ছে?’

প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মতবিনিময় সভা চললেও কোনো সংস্থার প্রতিনিধিই তাঁদের উপস্থাপনা শেষ করতে পারেননি। আলোচনা চলে অনেকটা বিক্ষিপ্তভাবে। অংশ নেওয়া সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রীকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে তাঁদের অধিকাংশ বক্তব্যেই মন্ত্রী সমালোচনামূলক কথা বলতে থাকেন।

শেষ পর্যায়ে এসে তাজুল ইসলাম বলেন, পল্লী উন্নয়ন একাডেমিগুলোকে কীভাবে আরও কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে একাডেমিগুলোকে অবদান রাখতে হবে। পল্লী উন্নয়ন একাডেমিগুলোর কর্মকর্তাদের দ্রুত নিজেদের মধ্যে সভা করে করণীয় ঠিক করতে হবে।