ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ‘বিশ্বাস ও উন্নয়ন’ নিয়ে সম্মেলন

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ‘দ্য ইন্টারসেকশনস অব ফেইথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ের কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়
ছবি: সংগৃহীত

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে) এবং যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির বার্কলে সেন্টার ফর রিলিজিয়ন পিস অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্সের ওয়ার্ল্ড ফেইথস ডেভেলপমেন্ট ডায়ালগের (ডব্লিউএফডিডি) যৌথ উদ্যোগে ‘দ্য ইন্টারসেকশনস অব ফেইথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ের কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে এই কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।

ডব্লিউএফডিডি ও সিপিজে ২০১৯ সাল থেকে একটি প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করছে। এই সহযোগিতামূলক গবেষণার প্রাথমিক লক্ষ্য হলো ‘সামাজিক সংহতি’ সম্পর্কে জানা এবং ধর্মীয় বিশ্বাস কীভাবে এটিকে প্রভাবিত করছে সেই বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা। সেই সঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাস কীভাবে উন্নয়নের চারটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র—শিক্ষা, জেন্ডার এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, যুবসমাজ, মিডিয়া ও যোগাযোগ এবং জলবায়ু–সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জকে প্রভাবিত করছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান করা।

কনফারেন্সে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জেনারেল এডুকেশনের ডিন এবং সিপিজের রিসার্চ ফেলো অধ্যাপক সামিয়া হক। তিনি বলেন,  ‘একটি জাতির উন্নয়নে ধর্মীয় বিশ্বাসের ভূমিকা বাড়ানোর জন্য সমন্বিত, সুচিন্তিত এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানি দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জান-রল্ফ জানোস্কি এবং ওয়ার্ল্ড ফেইথস ডেভেলপমেন্ট ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ক্যাথরিন মার্শাল।

জান-রল্ফ জানোস্কি বিশ্বের বিভিন্ন সম্প্রদায়কে একত্র করতে সঠিক যোগাযোগ পদ্ধতি মেনে এবং উপযুক্ত মানুষদের সঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর কথোপকথনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।

উন্নয়নের অন্য সব ক্ষেত্রকে গভীরভাবে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে ধর্ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ক্যাথরিন মার্শাল।

কনফারেন্সে চারটি প্যানেল আলোচনা এবং অংশগ্রহণকারীদের জন্য উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম প্যানেল আলোচনা পর্বের শিরোনাম ছিল ‘ধর্মীয় বিশ্বাস ও শিক্ষা’। ডব্লিউএফডিডির সিনিয়র গবেষক সুদীপ্ত রায় এই সেশনটি পরিচালনা করেন। প্যানেলের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইংয়ের পরিচালক এ কিউ এম শফিউল আজম। ইন্দোনেশিয়ার লেইমেনা ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মাতিয়াস হো এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নটর ডেমের আনসারী ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল এনগেজমেন্ট উইথ রিলিজিয়নের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মাহান মির্জা।

দ্বিতীয় প্যানেল আলোচনার বিষয় ছিল ‘ধর্মীয় বিশ্বাস, যুবসমাজ ও গণমাধ্যম’। এই সেশন পরিচালনা করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব জেনারেল এডুকেশনের সহকারী অধ্যাপক রতন কুমার রায়। প্যানেল আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের সহকারী সম্পাদক বদিউজ্জামান, সি-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক জায়ান মাহমুদ, সেভ অ্যান্ড সার্ভ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ তৈয়বুল বাশার এবং ময়মনসিংহের শান্তি মিত্র সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রোগ্রাম অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন অফিসার মো. আসাদুজ্জামান।

তৃতীয় প্যানেল আলোচনার শিরোনাম ছিল ‘ধর্মীয় বিশ্বাস, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন’। তথ্যচিত্র ‘নো আর্ক’ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে এই অধিবেশন শুরু হয়। এই অধিবেশনের প্যানেল সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজের পরিচালক পাভেল পার্থ, বাঙ্গালা ফিল্মসের সিইও ব্রাত্য আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সৌম্য সরকার।

চতুর্থ ও শেষ আলোচনার শিরোনাম ছিল ‘ধর্মীয় বিশ্বাস, জেন্ডার  ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি’। সেশনটি সঞ্চালনা করেন সিপিজের গবেষণা সহকারী জাহরা মায়েশা। এই অধিবেশন প্যানেলের সদস্যরা ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জেনারেল এডুকেশনের ডিন এবং সিপিজের রিসার্চ ফেলো অধ্যাপক সামিয়া হক, শ্রীলঙ্কার অ্যারিগাতু ইন্টারন্যাশনালের চাইল্ড পোভার্টি ইনিশিয়েটিভের ম্যানেজার হেশা লাকনি পেরেরা, ওয়ার্ল্ড ফেইথস ডেভেলপমেন্ট ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ক্যাথরিন মার্শাল এবং নেদারল্যান্ডসের ভ্রিজ ইউনিভার্সিটির ধর্ম ও উন্নয়নের অধ্যাপক আজ্জা কারাম।

কনফারেন্সে সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক মঞ্জুর হাসান।