গৌরনদীতে বাড়িতে ঢুকে যুবদলের আহ্বায়ককে পিটিয়ে জখম

বরিশাল জেলার মানচিত্র

বরিশালের গৌরনদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেনের (৩৮) বাড়িতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সময় তাঁর স্ত্রী, শিশুসন্তানসহ চার স্বজনকেও পিটিয়ে আহত করা হয় বলে অভিযোগ করেন জাকির হোসেন। গতকাল শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে তাঁর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আহত জাকিরকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত পৌনে আটটার দিকে তাঁর আড়াই বছর বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে নিজের বসতঘরে পায়চারি করছিলেন। এ সময় গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান মিয়ার (৩০) নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেলে করে প্রায় ৪০-৪৫ জন যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মী দেশীয় অস্ত্র, লোহার পাইপ, হাতুড়ি, হকিস্টিক নিয়ে আকস্মিক তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করেন। তাঁর কোল থেকে শিশুকন্যাকে কেড়ে নিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালান তাঁরা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা ইমরান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের হামলা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তাঁরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।’

জাকির হোসেনের স্ত্রী মনি আক্তার (২২) অভিযোগ করেন, ‘স্বামীকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে আমাকেও লাঞ্ছিত করে সন্ত্রাসীরা। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জাহেলিয়াতের যুগকেও হার মানিয়েছে। বাবার কোল থেকে অবুঝ শিশুকে কেড়ে নিয়ে আছাড় মেরে আহত করেছে তারা।’

জাকির হোসেন বলেন, হামলায় তাঁর চাচা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. আবুল কালাম শিকদার (৫৮), ভাই উপজেলা যুবদলের সদস্য মো. চুন্নু শিকদার (৪৫), স্ত্রী মনি আক্তার ও কন্যাসন্তান আহত হয়েছে। সবাইকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাতে হামলা হলেও আজ দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা করেননি জাকির হোসেন ও তাঁর পরিবারের কেউ। এ বিষয় জাকির বলেন, ‘প্রতিনিয়তই ছাত্রলীগ-যুবলীগ আমাদের ওপর হামলা করে। পুলিশ দেখেও কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এ জন্য আমরাও থানায় অভিযোগ দিই না।’

অন্যদিকে উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়ন যুবদলের সহসম্পাদক দুলাল হোসেন সরদার (৪০) অভিযোগ করেন, শুক্রবার বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কালু তালুকদারের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা তাঁকে ঘর থেকে টেনে বের করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন। তিনি বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন। তিনিও পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ দেননি।

অভিযোগের বিষয়ে বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কালু তালুকদার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। মাদকের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জুনিয়ররা তাঁকে কয়েকটা চড়থাপ্পড় দিয়েছে। আমি তাঁকে হামলা থেকে রক্ষা করে ভ্যানে করে নিরাপদে সরিয়ে দিয়েছি।’

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, এসব ঘটনায় এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।