আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি ৩ জানুয়ারি

১০ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলা
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানির জন্য আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি দিন রেখেছেন হাইকোর্ট। প্রস্তুতির জন্য রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রস্তুতির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময় চাওয়া হয়। আগামী বছরের জানুয়ারিতে শুনানির আরজি জানানো হয়। আদালত আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন। সেদিন শুনানি শুরু হতে পারে আশা করছি।’

আলোচিত এ মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের আদালত রায় দেন। একই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছায়, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন।

আইনজীবীরা বলছেন, বিচারিক আদালতে কোনো মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করার সুযোগ পান। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।

ওই মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা পৃথক ১২টি আপিল এর আগে ২০১৯ সালে শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চের কার্যতালিকায় ওঠে। একই বছরের ৮ জানুয়ারি বেঞ্চের একজন বিচারপতি শুনতে অপারগতা প্রকাশ করে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। পরে প্রধান বিচারপতির কাছে বিষয়টি পাঠানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য ওই বেঞ্চে পাঠান। গত ২০ জুলাই আদালত শুনানির জন্য ১৮ অক্টোবর দিন রেখেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি ওঠে।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া, দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

ইতিমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত হয়ে নিজামীর ফাসি কার্যকর হয়েছে। আরেক আসামি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ২০২১ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

আরও পড়ুন:

যেভাবে ধরা পড়ে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান
কী কী অস্ত্র ছিল