পদত্যাগ না করে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পথ খুলল

হাইকোর্টফাইল ছবি

ইউনিয়ন পরিষেদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করে পৃথক উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও মো. ওহিদুল ইসলাম। ইউপি চেয়ারম্যানের পদে থাকার কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে আপিল কর্তৃপক্ষ মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।

মনোনয়নপত্র বাতিলের পৃথক সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে ওই দুই জনপ্রতিনিধি পৃথক রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ আদেশ দেন।

ওই দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিলের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আপিল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। একই সঙ্গে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাদের আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ (ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন–২০২৪) নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর ফলে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও মো. ওহিদুল ইসলামের পৃথক উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আইনত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী এম মনজুর আলম।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। আর মো. ওহিদুল ইসলাম কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন। তিনি খোকসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান পদে থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় প্রথমে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে তারা সংশ্লিষ্ট আপিল কর্তৃপক্ষের (জেলা প্রশাসক) কাছে আপিল করেন। আপিল কর্তৃপক্ষ আপিল না মঞ্জুর করে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। এসব সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পেতে তাঁরা পৃথক রিট করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ও এম মনজুর আলম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. তায়্যিব–উল–ইসলাম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার।

পরে আইনজীবী এম মনজুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধানে ৫৯ ও ১৫২(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকার বা প্রশাসনিক একাংশ। কিন্তু উপজেলা পরিষদ আইনের ৮(২)(চ) বিধানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যন বা সদস্যের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাধা আছে। এখানে স্থানীয় সরকারের কথা উল্লেখ নেই। তাই স্থানীয় সরকার অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র বাতিলের ক্ষেত্রে ওই বিধানের প্রয়োগ আইন সম্মত নয়—এসব যুক্তিতে পৃথক রিট করা হয়।