ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে মারধরের শিকার সেই রিকশাচালকের জামিন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর গ্রেপ্তার রিকশাচালক আজিজুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ রোববার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আজিজুর রহমানের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন।
ফারজানা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, ধানমন্ডি থানায় করা পুরোনো হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার তাঁর মক্কেল রিকশাচালক আজিজুরের জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত শুনানি নিয়ে এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, একটি মামলায় গতকাল রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান। আদালত তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে ১৫ আগস্ট দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভেঙে দেওয়া বাড়িতে যান আজিজুর রহমান। তিনি নিজেকে রিকশাচালক বলে পরিচয় দেন। ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। শুধু বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ফুল দিতে এসেছেন। এ সময় কয়েকজন তাঁকে মারধর করলে পুলিশ তাঁকে নিয়ে যায়।
এদিকে আজিজুর রহমানকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রিকশাচালককে ১৬ আগস্ট ধানমন্ডি থানার একটি নিয়মিত মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়। মামলাটি চলতি বছরের এপ্রিলে করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে, আজিজুর রহমানকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে প্রচার করা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক।
ডিএমপি আরও বলেছে, আজিজুর রহমানকে যে মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে, সেটি একটি নিয়মিত মামলা। কিন্তু অনেকেই বিষয়টিকে হত্যা মামলা হিসেবে প্রচার করছেন, যা ভিত্তিহীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
এদিকে সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমানকে কিসের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা জানতে চেয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে কোনো অসংগতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা নিয়েছে ডিএমপি।
মামলায় আজিজুর রহমানের সম্পৃক্ততা তদন্ত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সম্প্রতি সংশোধিত সিআরপিসির ১৭৩(এ) ধারা মোতাবেক অতিসত্বর প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।