পুলিশের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা, খুনের মামলায় অব্যাহতি পেল কিশোর
ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের পর পুলিশের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রাজধানীর একটি হত্যা মামলা থেকে এক কিশোরকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ওই কিশোরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, গণ–অভ্যুত্থান চলার সময় গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর রায়েরবাগ এলাকায় খুন হন পুলিশের কনস্টেবল গিয়াস উদ্দিন। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা হত্যা মামলায় এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই কিশোরকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতিও দিয়েছিলেন আদালত।
কিশোরকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে ওই কিশোরকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। গণ–অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ওই কিশোর জামিনে কারাগার থেকে ছাড়া পায়।
পুলিশের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ১৯ জুলাই রায়েরবাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলার সময় রাত ৯টার দিকে একজন মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। তখন তাঁর পথ আটকে পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। পুলিশ পরিচয় পেয়ে ওই ব্যক্তিকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় দুজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দিয়েছেন। কিন্তু হত্যার সঙ্গে ওই কিশোরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোল্লা মো. খালিদ হোসেন প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। তাই ওই কিশোরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে পুলিশ যে আবেদন করেছে, তা অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
১৫ জুলাই ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক পুলিশের ওই আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি জানা গেছে আজ রোববার।
উল্লেখ্য, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ১৭৩ ধারায় মামলার তদন্ত শেষে আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ধারায় পুলিশকে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করতে বলা হয়েছে; কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বলা হয়নি। পরে অন্তর্বর্তী সরকার ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। এখন এসব প্রতিবেদনের আগে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ধারা অনুযায়ী, কোনো আসামি মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছেন কি না, সে ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে আদালতে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিধান রাখা হয়। এরপর প্রতিবেদনের তথ্য সাপেক্ষে মামলার ঘটনার সঙ্গে যদি কারও সংশ্লিষ্টতা না থাকে, তাহলে তাঁকে সেই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা যাবে।