মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’কে পক্ষপাতদুষ্ট আখ্যা দিয়ে সংস্থাটির পক্ষে না দাঁড়াতে বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ২৬ বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা বলেছেন, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে (এলান) দেওয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী সোচ্চার হওয়ায় তাঁরা মর্মাহত।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান ওই নাগরিকেরা। বিবৃতিতে বলা হয়, আদিলুর রহমান ও তাঁর একজন সহযোগীকে দেওয়া দুই বছরের সাজার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী সোচ্চার হয়েছে। এ নিয়ে তাঁরা গভীরভাবে মর্মাহত। সাজা পাওয়া দুজনই হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে উদ্বেগজনক মাত্রায় মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর দায়ে দোষী সাব্যাস্ত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অধিকারের মতো পক্ষপাতদুষ্ট সংস্থার পক্ষে দাঁড়িয়ে মৌলবাদের সমর্থকদের উসকে দেওয়া, মৌলবাদী শক্তিকে উৎসাহিত করা এবং সংখ্যালঘুদের ঝুঁকিতে ফেলা থেকে বিরত থাকতে বিদেশিদের আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা। একই সঙ্গে বিদেশি গোষ্ঠীগুলোকে অনুরোধ করছেন, তারা যেন পক্ষপাতদুষ্ট উৎসগুলোর ওপর নির্ভর না করে অন্য উৎসগুলো থেকে তথ্য যাচাই করেন।
রানা দাশগুপ্তসহ বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, লেখক–অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও রামেন্দু মজুমদার, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর সাত্তার, অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী, সালমা হক, অধ্যাপক আবুল বারক আলভী, অজয় দাশ গুপ্ত, কাজী মুকুল, মিলন কান্তি দে, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, মিথুশিলাক মুরমু, আসিফ মুনীর (তন্ময়), তৌহিদ রেজা নূর, আবুল মোমেন, জান্নাত–ই–ফেরদৌস (লাকি), অধ্যাপক নুজহাত চৌধুরী, আলী আকবর টাবী, নির্মল রোজারিও ও সুনন্দপ্রিয় ভিক্ষু।
২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর রহমান খান ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার হন আদিলুর। ১৪ সেপ্টেম্বর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার ওই মামলায় আদিলুর ও নাসির উদ্দিনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।