বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সমর্থনের অভিযোগ বীর বাহাদুরের বিরুদ্ধে

একেএম জাহাঙ্গীর ও সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিংছবি সংগৃহীত

বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এ কে এম জাহাঙ্গীর আজ মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন, সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিংসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আব্দুল কুদ্দুসকে সমর্থন দিচ্ছেন। এ জন্য ক্ষমতাসীন দলের সমর্থিত প্রার্থী হয়েও প্রতিনিয়ত হুমকি ও চাপের মুখে তিনি বাধ্য হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন।

গতকাল সোমবারও এক সংবাদ সম্মেলনে চারটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণের পরিবেশ না থাকা ও কতিপয় নেতা দলীয় আদর্শে ফিরে না এলে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বলেছিলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর। জেলা শহরের আর্মিপাড়া এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তবে সংবাদ সম্মেলনে এ কে এম জাহাঙ্গীর ছাড়া দলের কোনো নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন না।

এ কে এম জাহাঙ্গীর তাঁর ফেসবুকে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে এবং তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারণা না চালানোর জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে, কখন কী ঘটে যায়, অনুমান করা যাচ্ছে না। নির্বাচনে তাঁর জন্য কারও জীবন বিনাশ হোক, তিনি চান না। এ জন্য সবদিক বিবেচনা করে নির্বাচনী প্রচারণা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সরে যেতে পারছেন না। আগামীকাল বুধবার থেকে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন না তিনি।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী পরিচয় না দিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁকে আওয়ামী লীগের পরিচয় না দেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। কর্মী-সমর্থকদেরও উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটিতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে নিষেধ করা হয়েছে। অপর দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আব্দুল কু্দ্দুস প্রকাশ্যে বলছেন, তিনি সংসদ সদস্য বীর বাহাদুরের সমর্থিত প্রার্থী।

বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস—এই দুজন প্রার্থী হয়েছেন। জাহাঙ্গীর ২০১৯ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে আব্দুল কুদ্দুস চারবার উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু থেকে অসমর্থিতভাবে প্রচারণা রয়েছে, আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার পছন্দের প্রার্থী সাবেক বিএনপি নেতা আব্দুল কুদ্দুস। পৌর কাউন্সিলর অজিত কান্তি দাশকে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। অজিত নির্বাচনে যেতে সম্মত না হওয়ায় এ কে এম জাহাঙ্গীর প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে।

বান্দরবান-৩০০ আসনের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, এ কে এম জাহাঙ্গীর ছাড়া দল থেকে কোনো প্রার্থী নেই। প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন পরিচালনার নেতৃত্ব দিতে হবে তাঁকে। দল, দলের নেতা-কর্মী ও সংসদ সদস্যকে দোষ না দিয়ে তাঁর দেখা উচিত নিজের দুর্বলতাকে। তাঁকে বারবার বলা হয়েছে এটি দলীয় প্রতীকের নির্বাচন নয়। প্রার্থীকেই দলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে নির্বাচনের কাজে লাগাতে হবে।