ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহ কমেছে তিন ভাগের দুই ভাগ

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কমেছে কক্সবাজারের মহেশখালীর ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহফাইল ছবি

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া রিমালের প্রভাবে কক্সবাজারের মহেশখালীর দুটি ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল থেকে গ্যাসের সরবরাহ তিন ভাগের দুই ভাগ কমে গেছে। রিমালের প্রভাবের আগে প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছিল। বর্তমানে দুটি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ হচ্ছে ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দুটি টার্মিনাল থেকে কমবেশি ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট পাওয়া যাচ্ছে। দুটি টার্মিনালই চালু রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে ধাপে ধাপে সরবরাহ বাড়ানো হবে। প্রতিষ্ঠানটির এলএনজি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শুরু হওয়ার আগে দুটি টার্মিনাল থেকে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছিল। তবে সমুদ্র উত্তাল হওয়ার পর বড় বড় ঢেউয়ের কারণে টার্মিনাল দুলছে। পর্যাপ্ত গ্যাস নেওয়া যাচ্ছে না।

টার্মিনাল থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রামেও কয়েকটি এলাকায় গ্যাসের চাপ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন গ্রাহকেরা। আবার একটি এলাকায় বেলা ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ বলে জানা গেছে। নগরের ফয়ে’স লেকের লেক ভ্যালি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা বিবি মরিয়ম বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ‘বেলা ১১টার দিকে গ্যাস চলে গেছে। এখনো আসেনি।’

আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। অন্যটি সামিট এলএনজি টার্মিনাল। এই দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে দিনে প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে আরপিজিসিএল কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম পুরোপুরি এলএনজিনির্ভর। অর্থাৎ দুই টার্মিনাল থেকেই এ অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। এ কারণে টার্মিনাল বন্ধ হলে বা সরবরাহ কমলে চট্টগ্রামেও সংকট তৈরি হয়। যেমন চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ২২৫ মিলিয়ন ঘনফুট।

কর্ণফুলী বিতরণ কোম্পানির (কেজিডিসিএল) আওতাধীন চট্টগ্রাম, বাখরাবাদের কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় জাতীয় গ্রিডের পাশাপাশি এলএনজির বড় অংশ সরবরাহ করা হয়। গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে এসব এলাকায় সংকট দেখা দিয়েছে বলে আরপিজিসিএল সূত্র জানিয়েছে।

চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে আছে কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বর্তমানে সার কারখানায় গ্যাস দেওয়া হচ্ছে না।