দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশে বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয় বেশি
চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে ২৪ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। স্বাস্থ্য খাতে পরিকল্পিত অর্থায়ন না করলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।
পারিবারিক আয়ের ১০ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হলে তাকে বলা হয় বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয়। এই ব্যয় বেশি হলে অনেক মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়েন, অনেকে নিঃস্ব হয়ে যান। চিকিৎসা ব্যয় হলে মানুষ সেবা নেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অর্থনীতি–বিশেষজ্ঞরা এই কথা বলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘কাঙ্ক্ষিত পৃথিবী গড়ি: সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি’।
আজকের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের পক্ষ থেকে দেওয়া উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয়ের মুখে পড়ছে। এই হার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে এই হার সবচেয়ে কম ভুটানে। দেশটির ১ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার এই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। ভারতে এই হার ১৬ দশমিক, মিয়ানমারে ১৪ শতাংশ, নেপালে ১০ শতাংশ। অন্য সব দেশে ৬ শতাংশের কম।
পর্যাপ্ত জনবল না দিলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
অনুষ্ঠানে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের জন্য সরকার কী করছে এবং আরও কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্য অর্থায়ন শাখার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার মোহাম্মদ তহিদুল ইসলাম বলেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অর্থায়ন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধি, বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার এবং নজরদারি-মূল্যায়ন জোরদার করা দরকার।
মুক্ত আলোচনা পর্বে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় বাড়ছে কেন, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে সাবেক স্বাস্থ্যসচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর খুঁজতে এক দিনের একটি সেমিনার দরকার।