ফার্নিচারপ্রেমীদের নজর কেড়েছে নাভানা ফার্নিচারের প্যাভিলিয়ন

ফার্নিচারপ্রেমীদের দৃষ্টি কেড়েছে নাভানার নান্দনিক প্যাভিলিয়নছবি: সংগৃহীত

বাংলা বর্ষপঞ্জিতে মাঘ মাস চলছে। হিমশীতল সকালে আট লেনের কুড়িল-পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়েতে বাহনের ভিন্নতা থাকলেও অনেকেরই গন্তব্য ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। লেকের পাশ দিয়ে, মাঠ পেরিয়ে মেলায় যেতে সকাল শেষে দুপুরকে স্বাগত জানায় ঘড়ির কাঁটা। মেলায় পৌঁছানোর পর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছেন অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাক ও পদচারণে মুখর মেলাপ্রাঙ্গণ।

মেলার ভেতর আরেক মেলা

বাণিজ্য মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থী ও ফার্নিচারপ্রেমীদের দৃষ্টি কেড়েছে নাভানা ফার্নিচারের নান্দনিক প্যাভিলিয়ন। দরকারি ফার্নিচারের সব উপকরণে পসরা সাজানো নাভানার প্যাভিলিয়নে। এ যেন ‘মেলার ভেতর আরেক মেলা!’

নাভানা ফার্নিচারের হেড অব রিটেইল অপারেশন আবদুল হাই সাজিত বলেন, ‘ক্রেতাদের চাহিদার কথা চিন্তা করেই আমরা প্যাভিলিয়নটি সাজিয়েছি। এখানে রয়েছে বেডরুম, লিভিং, ডাইনিং রুমসহ বাসাবাড়ির বিভিন্ন আসবাবের সমাহার। কেউ চাইলে ক্যাটালগ, অনলাইন কিংবা ফেসবুকে দেখেও পছন্দের ফার্নিচার অর্ডার করতে পারবেন। বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে নাভানা ফার্নিচার সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।’

শতাধিক ডিজাইনের পণ্য নিয়ে নাভানা

প্রতিবছর বাণিজ্য মেলায় নাভানা নিয়ে আসে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের ফার্নিচার। আবদুল হাই সাজিত বলেন, ‘এবারের মেলা উপলক্ষে নাভানা ফার্নিচার নতুন ২৫ থেকে ৩০টি ফার্নিচার তৈরি করেছে। ডাইনিং টেবিলের কাঠ, এসএস ও মার্বেলটপ দিয়ে ভিন্নধর্মী তিনটি ডাইনিং টেবিল, সোফা কাম বেডসহ মাল্টিফাংশন কিছু ফার্নিচার মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে। সোফা সেট ও অন্যান্য আসবাবে আধুনিক ডিজাইন ও নতুনত্বের ছোঁয়া নিয়ে এবারের বাণিজ্য মেলায় রয়েছে নাভানা ফার্নিচারের শতাধিক নতুন ডিজাইন।’

ফার্নিচারের চেয়ে বেশি কিছু

ফার্নিচার এখন শুধু ঘরের আসবাব হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না। বরং ঘরকে আরও সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে। একসময় ঘর সাজানোতে ব্যবহৃত হতো ভারী  ডিজাইন কিংবা কাঠের কার্ভিং বা মোল্ডিংসম্পন্ন সূক্ষ্ম ডিজাইনের হরেক রকমের ফার্নিচার। যেখানে উপযোগিতার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হতো ফার্নিচারের আভিজাত্য ও গাম্ভীর্যতার প্রতি। তবে এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিচ্ছে নাভানা নতুনত্বকে।

বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে নাভানা ফার্নিচার সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে
ছবি: সংগৃহীত

সব চাহিদা নাভানা ফার্নিচারেই পূরণ

উৎপাদনে নতুনত্বের ধারণাকে পুঁজি করে ভোক্তাকে রুচিসম্মত এবং আধুনিক আসবাবপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০০২ সালে নাভানা ফার্নিচারের যাত্রা। শুরুতে তিন থেকে চারটি ক্যাটাগরির ফার্নিচার নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ৩০-৩৫ ক্যাটাগরির ফার্নিচার সরবরাহ করছে নাভানা ফার্নিচার। যেখানে হোম, অফিস, মেডিকেল, স্কুল, ইন্টেরিয়র ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্যাটাগরি অন্যতম।

এসব ক্যাটাগরির ভেতর আবার রকমভেদ আছে। হোম ফার্নিচারের ভেতর বেডরুম সেট, ডাইনিং সেট ও লিভিং সেট এবং অফিস ফার্নিচারের মধ্যে টেবিল, চেয়ার, ওয়ার্কস্টেশন, আলমারি ইত্যাদি অন্যতম। এ ছাড়া মৌলিক সব ফার্নিচার তৈরি করা হয় মেডিকেল স্কুল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্যাটাগরিতে। এর বাইরে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজও করা হয়। যার মধ্যে অডিটরিয়াম সেটআপ, ফার্মাসিউটিক্যালস ল্যাব সেটআপ ও বিভিন্ন প্রকল্পভিত্তিক কাজ অন্যতম।

যার চাহিদা যেমন

নাভানা ফার্নিচার প্রচার ও বিজ্ঞাপনের কথা মাথায় রেখে মেলায় পণ্য প্রদর্শন করছে। প্রদর্শনের বাইরেও নাভানা ফার্নিচারের মোট ২৫ থেকে ৩০ ডিজাইনের বেড রয়েছে। দাম ৩০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। ৪৫ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে ২৫ থেকে ৩০টি ডিজাইনের আলমারি। ড্রেসিং টেবিলে ডিজাইনের সংখ্যা ২০ থেকে ৩০। দাম ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা। সোফাসেটের দাম ৪০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। সোফার ডিজাইনের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০টি। ১৫ থেকে ২৫টি ডিজাইনের ডাইনিং টেবিল রয়েছে নাভানা ফার্নিচারের। যার সর্বোচ্চ মূল্য দেড় লাখ টাকা।

ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ

নাভানার ডিজাইন টিমটি দক্ষ এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া আধুনিক। প্রতিটি পার্টসের বিস্তারিত ড্রয়িং ও ডিটেইল ডিজাইন থাকে। ক্রেতার চাহিদা, গ্লোবাল ট্রেন্ড, অভ্যন্তরীণ গবেষণা এবং কম উপাদানে পণ্য তৈরিতে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। গ্রাহকেরা যাতে ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারেন, সে জন্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অযাচিত উপাদান এবং শ্রমঘণ্টা বা কোনো প্রকার অপচয় যেন না হয়, সেটি ডিজাইনের সময়ই নিশ্চিত করা হয়। ডিজাইনের বহুবিদ ব্যবহার উপযোগিতা, আর্গোনোমিক্স এবং টেকসই ফিচারগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয় নাভানার ফার্নিচারে।

অফিস ফার্নিচার, বেডরুম, লিভিং, ডাইনিং রুমসহ বাসাবাড়ির বিভিন্ন আসবাবের সমাহার রয়েছে নাভানার প্যাভিলিয়নে
ছবি: সংগৃহীত

ক্রেতার সন্তুষ্টিই মূল

ক্রেতাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে নাভানা ফার্নিচার দুই ধরনের বিক্রয়োত্তর সেবা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রস্তুতকৃত ত্রুটি বা ‘ম্যানুফ্যাকচারিং ডিফেক্টের’ জন্য এক বছর ওয়ারেন্টি এবং ঘুণে ধরাজনিত সমস্যার জন্য পাঁচ বছরের সার্ভিসিং গ্যারান্টি। রয়েছে ১৮টি ব্যাংকের সঙ্গে ১২ মাসের ইএমআই সুবিধা। ক্রেতারা চাইলে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমেও মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।

সারা দেশে নাভানা  

ঢাকার প্রধান প্রধান এলাকা, বিভাগীয় শহরসহ উল্লেখযোগ্য জেলা শহরগুলোতে নাভানা ফার্নিচারের রয়েছে ৪০টি এক্সক্লুসিভ শোরুম। সেই সঙ্গে আছে অনলাইনে পণ্য কেনার সুবিধা। ফার্নিচার প্রস্তুত থাকলে কেনার পরদিনই বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। আর নতুনভাবে প্রস্তুত করতে হলে বাসা বা অফিসে পৌঁছাতে লাগবে সর্বোচ্চ ১৫ দিন। ক্রেতারা চাইলে বাসায় গিয়ে নাভানার ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা সাজিয়ে দেবেন।