উপাচার্যকে নিয়ে বক্তব্য, চবির ডিনকে শোকজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন হেলাল উদ্দিন নিজামীকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে (শোকজ) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, তাঁর ওই বক্তব্যে উপাচার্যের মানহানি হয়েছে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে প্রথম আলো পত্রিকায় বক্তব্য দিয়েছিলেন ডিন হেলাল উদ্দিন নিজামী।

গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসানের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়৷ আজ মঙ্গলবার সকালে এই চিঠি হেলাল উদ্দিন নিজামীর কার্যালয়ে পৌঁছেছে।

কারণ দর্শানোর ওই চিঠিতে বলা হয়, গত শুক্রবার প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত ‘সিন্ডিকেট নির্বাচন নিয়ে উপাচার্য ডিন বিতণ্ডা’খবরে আপনাকে (হেলাল উদ্দিন নিজামী) উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। পুরো কর্তৃপক্ষ দুর্নীতিতে জড়িত। শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে সবকিছুতেই অনিয়ম হচ্ছে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রমাণ ছাড়া ঢালাওভাবে এ ধরনের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে৷ এটি উপাচার্যের মানহানির শামিল। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে আপনার (হেলাল উদ্দিন নিজামী) এ ধরনের বক্তব্যের প্রমাণসহ ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে৷

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ঢালাওভাবে প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের মন্তব্য ভিত্তিহীন এ মন্তব্যর যথাযথ প্রমাণ ও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

হেলাল উদ্দিন নিজামী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি চিঠির উত্তর তৈরি করছেন। এ বিষয়ে পরে মন্তব্য করবেন।

গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এক সভা চলাকালে উপাচার্য শিরীণ আখতার ও ডিন হেলাল উদ্দিন নিজামীর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র বলছে, ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি এবং সমাবর্তন আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে উপাচার্যের দপ্তরে বৃহস্পতিবার ওই সভার আয়োজন করা হয়। এতে উপাচার্য শিরীণ আখতার ও আট অনুষদের ডিন উপস্থিত ছিলেন। সভা চলাকালে সিন্ডিকেটে ডিন ক্যাটাগরি পদে নির্বাচন কবে, তা উপাচার্যের কাছে জানতে চান হেলাল উদ্দিন নিজামী।

এ নিয়ে দুজনের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে হেলাল উদ্দিন নিজামী প্রথম আলোকে বলছিলেন ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। পুরো কর্তৃপক্ষ দুর্নীতিতে জড়িত। শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে সবকিছুতেই অনিয়ম হচ্ছে। কিন্তু উপাচার্য এসব রুখতে চান না। এর প্রমাণ হচ্ছে সিন্ডিকেট নির্বাচন না দেওয়া। আমি শুধু নির্বাচন কবে হবে, এটি জানতে চেয়েছিলাম। এতে উপাচার্য অশোভন আচরণ করেছেন। অশালীন কথা বলেছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, ১৬ সদস্যের এ পর্ষদের ৮ পদই খালি। আর মেয়াদোত্তীর্ণ সদস্য আছেন আরও দুজন। সিন্ডিকেটে ডিন ক্যাটাগরির পদে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১২ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর।

দুই বছর পর পর এ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও আট বছর ধরে এ নির্বাচন হচ্ছে না। সর্বশেষ গত ১২ অক্টোবর সিন্ডিকেটে ডিন ক্যাটাগরির নির্বাচন চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন ৮ অনুষদের ডিন। এ নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর প্রথম আলোতে ‘সিন্ডিকেটের অর্ধেক পদই খালি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।