কক্সবাজারে বিমানঘাঁটিতে সংঘর্ষের ঘটনার বিবরণ ও ব্যাখ্যা আইএসপিআরের

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)

কক্সবাজারে বিমানবাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে সংঘর্ষের ঘটনার বিবরণ দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। আজ সোমবার বিকেলে আইএসপিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিবরণের পাশাপাশি এ ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু নিয়েও নিজেদের ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কক্সবাজারেরর সমিতিপাড়ার কিছু স্থানীয় দুর্বৃত্ত সোমবার বিমানবাহিনী ঘাঁটিতে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। উল্লেখ্য যে বিয়াম স্কুলের পাশে বিমানবাহিনীর চেকপোস্ট থেকে স্থানীয় এক ব্যক্তির মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় বিমানবাহিনীর প্রভোস্ট কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ঘাঁটির ভেতরে নেওয়া হয়। এ সময় সমিতিপাড়ার আনুমানিক দুই শতাধিকেরও বেশি স্থানীয় লোকজন বিমানবাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বিমানবাহিনীর চেকপোস্ট এলাকায় বিমানবাহিনীর সদস্য ও সমিতিপাড়ার কতিপয় দুষ্কৃতকারী লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে কতিপয় কুচক্রী মহলের ইন্ধনে দুর্বৃত্তরা বিমানবাহিনীর সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন, যার মধ্যে বিমানবাহিনীর ৪ জন সদস্য (১ জন অফিসার ও ৩ জন বিমানসেনা) আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং শিহাব কবির নাহিদ নামের এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমানবাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।’

আইএসপিআর বলেছে, ‘রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার্থে বিমানবাহিনীর সদস্যগণ কর্তৃক বিমানবাহিনীর “রুলস অব এনগেজমেন্ট” অনুয়ায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। তবে স্থানীয় জনসাধারণের ওপর কোনো প্রকার তাজা গুলি ছোড়া হয়নি। বিমানবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’

স্থানীয় জনগণের ইটপাটকেলের আঘাতে বিমানবাহিনীর গাড়ির কাচ ভেঙে যায় জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এ ছাড়া স্থানীয় জনগণ ঝোপঝাড়ে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেছিল, যা পরবর্তীতে বেশি সম্প্রসারিত হয়নি। এমতাবস্থায়, একটি কুচক্রী মহল বিমানবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিমানবাহিনীর গুলিতে উক্ত যুবক নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যা সত্যি নয়। এ ক্ষেত্রে প্রচারিত গুলির খোসার ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে উক্ত খোসাটি ফাঁকা গুলির (ব্ল্যাঙ্ক কার্টিজ), যা প্রাণঘাতী নয় এবং শুধু শব্দ তৈরি করে। যুবক নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে।’

আরও পড়ুন

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এ ছাড়া লক্ষ করা যাচ্ছে যে উক্ত ঘটনা প্রকাশে কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের নাম বিমানবাহিনী ঘাঁটি শেখ হাসিনা হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে, যা সত্য নয়। ওই ঘাঁটির নাম ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারি প্রজ্ঞাপনে পরিবর্তন করে বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার রাখা হয়, যা বর্তমানেও বহাল রয়েছে।’

আইএসপিআর বলেছে, ‘বাংলাদেশ বিমানবাহিনী দেশের আকাশসীমা রক্ষার পাশাপাশি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের আপামর জনসাধারণের সাথে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বিমানবাহিনী দেশের মানুষের কল্যাণে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। দেশের জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।’

আরও পড়ুন