দুই পক্ষের হাতাহাতি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ঢাকা, ১৬ মে
ছবি: প্রথম আলো

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন ও ভোট নিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভের সময় আজ মঙ্গলবার দুপুরে সমিতি ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক আইনজীবী জানান, আজ দুপুরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সমিতি ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন। অন্যদিকে সমিতি ভবনের দ্বিতীয় তলায় সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত আইনজীবীরা। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বেলা দেড়টার দিকে মিছিল নিয়ে সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় পরস্পরবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। একপর্যায়ে সম্পাদকের কক্ষে দরজা ও জানালার গ্লাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তখন সমিতির সম্পাদক মো. আবদুন নূর তাঁর কক্ষে ছিলেন।

এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন। উভয় পক্ষই নিজেদের পক্ষের কয়েকজন আইনজীবী আহত হন বলে দাবি করেন।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন (২০২৩-২৪) হয়। এই নির্বাচন পরিচালনায় উপকমিটি নিয়ে ভোটের প্রথম দিন ১৫ মার্চ তর্কে জড়ায় দুই পক্ষ। পরে পুলিশ আইনজীবী ও সাংবাদিকদের পিটিয়ে সমিতির মিলনায়তন (ভোটকেন্দ্র) থেকে বের করে দেয়। বর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা দৃশ্যত ভোট থেকে বিরত থাকেন। ভোটের ফলাফলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৪টি পদের সব কটিতেই জয় পান আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেলের আইনজীবীরা।

আইনজীবীদের তথ্যমতে, এরপর সমিতির ভোট নিয়ে প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভ-মিছিল করে আসছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। অন্যদিকে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে মাঝেমধ্যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে থাকেন।

আজ এ ঘটনার পর সমিতির সম্পাদক মো. আবদুন নূর বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কর্মসূচি ছিল সমিতি ভবনের নিচে। তাদের ইস্যু সমিতির নির্বাচন নয়, জাতীয় নির্বাচন প্রভাবিত করতে এখানে ইস্যু বানাতে চায়। আমরা দ্বিতীয় তলায় ছিলাম, নিচে যাইনি। তারা চড়াও হয়ে এখানে এসে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া বাধানোর চেষ্টা করেছে। সর্বোচ্চ সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছি। তারা এখানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে আসে না, আসে সহিংসতার জন্য। তারা অফিস ভাঙচুর করেছে, কয়েকজন আইনজীবীকে আহত করেছে। এর বিরুদ্ধে আইনগত পদেক্ষপ নেব।’

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তারা (আওয়ামীপন্থী) ভাঙচুর করে আমাদের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা–কর্মী তথা সাধারণ আইনজীবীদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামীপন্থীদের হামলায় বেশ কয়েকজন আইনজীবী আহত হয়েছেন।’