বিশ্বকে ন্যায্য ও টেকসই করতে চায় ব্রাজিল

ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা সেমিনারে বক্তব্য দেন। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ঢাকা, ৮ এপ্রিলছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকে ন্যায্য ও টেকসই করার প্রত্যয়ে জি২০-এর মতো প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করতে চায় ব্রাজিল। এ লক্ষ্যে তিনটি অগ্রাধিকারের কথা জানান ঢাকা সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ সোমবার বিকেলে আয়োজিত এক সেমিনারে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলেন। জি২০-এ ব্রাজিলের অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে মূল বক্তা ছিলেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা।

ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদা ফিজা কবির, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ ও ফ্রেন্ডশিপ এনজিওর নির্বাহী পরিচালক রুনা খান সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির ১৯ দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) অর্থনৈতিক জোট জি-২০। এই জোটের বর্তমান সভাপতি দেশ ব্রাজিল। ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা বিশ্বকে ন্যায্য ও টেকসই করার উদ্দেশ্য নিয়ে জি২০ সভাপতি দেশ হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনটি অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছেন। প্রথমটি হচ্ছে, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই। দ্বিতীয়টি, জ্বালানির রূপান্তর এবং এর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত দিক বিবেচনায় টেকসই উন্নয়নের প্রচার। আর শেষ অগ্রাধিকার হচ্ছে জাতিসংঘসহ বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার।

মাউরো ভিয়েরা বলেন, উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য যেসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল। বিশ্ব গভীরভাবে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সবাই অনুভব করেন। এসব সংস্কার যে জরুরি, তা প্রমাণের জন্য এটা তুলে ধরা যথেষ্ট যে বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থায় উন্নয়শীল দেশগুলোর প্রতিনিধিত্ব কম।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে মূল বক্তা ছিলেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা ঢাকা, ৮ এপ্রিল
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ভূরাজনৈতিক যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, তা দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্রমাগত ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্য বৃদ্ধি; সশস্ত্র সংঘাত; বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি; বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি; খাদ্য ও জ্বালানির দামে অস্থিরতা এবং জলবায়ু সংকটের মতো বিষয়গুলো এর মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এসব সংকট আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করে। তবে সেই প্রভাব সবার ক্ষেত্রে সমান হয় না। উন্নয়নশীল দেশগুলোই এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতি দরিদ্ররা সব সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়।’

মাউরো ভিয়েরা বলেন, ব্রাজিল বিশ্বাস করে যে জি২০ এমন একটি ফোরাম, যেখান থেকে এসব বৈশ্বিক সংকটের সমাধানে সম্মিলিত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্রাজিল বিশ্বাস করে যে জি২০ অবশ্যই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করবে এবং বহুপক্ষীয় সহযোগিতার পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবে।