আদিলুর ও নাসিরের সাজা বাড়াতে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল

আদালতের রায়ের পর মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর
ছবি: প্রথম আলো

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) ৫৭ ধারার মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি দায়ের করা হয়।

এ তথ্য জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাইব্যুনাল কম সাজা দিয়েছেন। এর সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আইনের ৮৪ ধারা অনুসারে আপিলটি দায়ের করা হয়েছে। অবকাশ শেষে কাল রোববার কোর্ট খুলছে। গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য আপিলটি হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হবে। হাইকোর্টের কোন বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে, তা আলোচনাসাপেক্ষ নির্ধারণ করা হবে।

এক দশক আগের ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) ৫৭ ধারার মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসিরকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের পর আদিলুর ও নাসিরকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তাঁরা কারাগারে আছেন।

ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেছেন আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিন। আপিলে জামিনের আবেদনও রয়েছে। আপিলে বিচারিক আদালতের সাজার রায় বাতিল ও আপিলকারীদের খালাস চাওয়া হয়েছে। আর আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদিলুর ও নাসিরের জামিন ও জরিমানা স্থগিত চাওয়া হয়েছে। আপিলটিও গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য অপেক্ষায়।

২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য-বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর ও নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এই মামলায় আদিলুর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ১১ আগস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে অধিকারের কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুটি কম্পিউটার ও দুটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। সে বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিলুর ও নাসির ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেন, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেন। মামলায় আইসিটি আইনের ৫৭ (২) ধারায় ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ২৪ আগস্ট এ মামলায় যুক্তিতর্কের শুনানি শেষ হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন আদালত।