ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হলসহ পাঁচ স্থাপনার নাম পাল্টাতে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ওসমান হাদি হল’ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বীরপ্রতীক ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম হল’সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবিতে উপাচার্যের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ডাকসুর নেতারাসহ একদল শিক্ষার্থী। তাঁরা জুলাই গণহত্যার সমর্থন দেওয়া ঢাবি শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের ব্যাপারে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
আজ রোববার বেলা আড়াইটায় ডাকসু ও হল সংসদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনের অবস্থান নেন। পরে বিকেল সাড়ে চারটায় উপাচার্যের মৌখিক আশ্বাসে কর্মসূচি শেষ করে ফিরে যান। উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে তাঁরা ‘ফ্যাসিবাদের আস্তানা, ঢাবিতে থাকবে না’, ‘মুজিববাদ মুজিববাদ, মুর্দাবাদ মুর্দাবাদ’সহ নানা স্লোগান দেন।
ঘেরাও কর্মসূচিতে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা ইতিহাস থেকে দেখেছি, হাসিনার চেয়েও বড় স্বৈরাচার ছিল হাসিনার পিতা মুজিব। হাসিনার বিদায়ের পর সেই স্বৈরাচারের আইকন মুজিবের কোনো চিহ্ন ঢাবিতে রাখা হবে না। পাশাপাশি জুলাইয়ে যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী গণহত্যা সর্মথন দিয়েছে, তাদেরও প্রশাসনিক ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে।’
ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমরা আজকে দুটি দাবি নিয়ে এখানে এসেছি। আমাদের প্রথম দাবি হলো ফ্যাসিবাদের আইকনদের নাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো স্থাপনা আছে, সব স্থাপনার নাম অনতিবিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়েছে। আইকনদের নামে ক্যাম্পাসে পাঁচটি স্থাপনা আছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ শেখ মুজিব হলের নাম পাল্টে জুলাইয়ের সহযোদ্ধা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যিনি সব সময় সংগ্রাম জারি রেখে গেছেন ‘শহীদ ওসমান হাদি হল’ নাম করার প্রস্তাব এসেছে। এরপর ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পাল্টে ‘বীরপ্রতীক ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম হল’ করার প্রস্তাব এসেছে।
পরে বেলা সাড়ে তিনটায় সহ–উপাচার্য সায়মা হক বিদিশার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ডাকসুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হলের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকিটা প্রসিডিওর (প্রক্রিয়া) অনুযায়ী পাস হবে। উপাচার্য স্যার অনলাইনে যুক্ত হয়ে মৌখিক স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত দেন।’
যে পাঁচ স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়েছে সেগুলো হলো শেখ মুজিবুর রহমান হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শেখ রাসেল টাওয়ার, বঙ্গবন্ধু টাওয়ার এবং ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির শহীদ অ্যাথলেট সুলতানা কামাল হোস্টেল।