‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’

চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিষয়ে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া ওই প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যেকোনো আত্মমর্যাদাশীল দেশের মতো বাংলাদেশ নিজেদের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র বিষয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই নীতির ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ যাতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে পারে এবং স্বাধীনভাবে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নীতি গ্রহণ করতে পারে বাংলাদেশের সেই সার্বভৌম অধিকারের প্রতি সংশ্লিষ্ট সবাই সম্মান দেখাবে বলে বাংলাদেশ আশা করে।  

প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যর পরিপ্রেক্ষিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলতে চায়, বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া রূপরেখা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ যে কোনো আত্মমর্যাদাশীল দেশের মতো নিজেদের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র বিষয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।

এর আগে বুধবার ঢাকায় চীনের দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনের একটি বক্তব্য প্রকাশ করে।

সেখানে বাংলাদেশ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য ঘিরে চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রশ্ন এবং তার জবাবে ওয়েনবিনের জবাব তুলে ধরা হয়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, সব ধরনের আধিপত্যবাদ ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করতে তাঁরা প্রস্তুত আছেন।

গ্লোবাল টাইমসের প্রশ্নে বলা হয়, সম্প্রতি আমরা লক্ষ করেছি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বিভ্রান্তিকর এবং এই নিষেধাজ্ঞা একটি খেলার মতো। তিনি বলেছেন, যেকোনো দেশের সরকার পতনের ক্ষমতা তাদের রয়েছে। বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পায় না এবং তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন, যেন বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানকারী দেশ থেকে কিছু কেনা না হয়।

জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো আমাদেরও নজরে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে একটি দেশ নিজেদের বর্ণবৈষম্য, বন্দুক সহিংসতা ও মাদকের বিস্তারের সমস্যার দিকে চোখ বন্ধ রেখে দীর্ঘ দিন ধরে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের অজুহাতে বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের জনগণেরই বলিষ্ঠ অবস্থানের কথা বলেননি, তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশের বিশেষত উন্নয়নশীল বিশ্বের মনের কথা বলেছেন।

আরও পড়ুন