ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর ফসলি জমির

পানি জমে খেতের ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত মঙ্গলবার পটুয়াখালীর আউলিয়াপুরের বলইকাঠি গ্রামেছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাত ও অতিবৃষ্টিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে কৃষিতেও। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের করা ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ৪৮টি জেলার কৃষিতে রিমালের প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩টি জেলা। রিমালের আঘাতে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ১০৯ হেক্টর ফসলি জমির।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  করা  প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির এই তথ্যটি সাংবাদিকদের জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। সাত-আট দিন পর ক্ষতির প্রকৃত মাত্রাটি বোঝা যাবে বলছে মন্ত্রণালয়।

গত রোববার রাতে বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এই ঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী,  ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে দেশের ৭ জেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া উপকূল ও এর আশপাশের ১৯টি জেলায় প্রায় পৌনে ২ লাখ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ৪০ হাজার ৩৩৮টি এবং আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫২৮টি ঘরবাড়ি। আর এই ঝড়ে দুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বরিশাল অঞ্চলের ছয়টি জেলা। এগুলো হলো বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা। এ ছাড়া খুলনা অঞ্চলের চার জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইল এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের তিন জেলা নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার জেলার কৃষিতে বেশি আক্রান্ত হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দুর্যোগের কবলে পড়েছে ৫২ হাজার ১৯০ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন সবজি, ১০ হাজার ৮৪৩ হেক্টর আউশ বীজতলা, ২১ হাজার ৪৩৪ হেক্টর আউশের জমি, ৭ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমির বোরো ধান, ৪  হাজার ৮২৬ হেক্টর জমির বোনা আমন, ২৯ হাজারের হেক্টরের বেশি জমির পাট। এ ছাড়া তিল ও মরিচেরও বেশ ক্ষতি হয়েছে। আর ৭ হাজারের হেক্টরের বেশি জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।