কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আহ্বান রুমার বম সম্প্রদায়ের লোকজনের

কেএনএফের সন্ত্রাস ও লুটপাটের বিরুদ্ধে বম জনগোষ্ঠীর লোকজনের মানববন্ধন। আজ সকালে বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরের রুমা বাজারেছবি সংগৃহীত

বান্দরবানের রুমা উপজেলার বম জনগোষ্ঠীর লোকজন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন। আজ বুধবার সকালে উপজেলা সদরে এই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে তাঁরা কেএনএফ সদস্যদের অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লুট করা ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫টি গুলিও ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।

আজ সকাল ১০টায় রুমা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় সাধারণ বম জনগোষ্ঠীর ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে রুমা বাজার ও আশপাশের পাড়ার শতাধিক বম নারী-পুরুষ অংশ নেন। তাঁদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাবেক ইউপি সদস্য লাললুং থাং বম, ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান চার্চের (ইসিসি) সাধারণ সম্পাদক রেভারেন্ড লাল পেকলিয়ান বম ও এস্টার বম। বক্তারা বলেছেন, শান্তি আলোচনা চলাকালে কেএনএফ রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি এবং পুলিশের অস্ত্র লুট করেছে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সরকার ও সাধারণ মানুষ কেউ আশা করেননি। এখন বমদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেক বম পরিবার বনে-জঙ্গলে পালিয়ে রয়েছেন। সাধারণ বমরা স্বাভাবিকভাবে চলাচল ও জীবন যাপন করতে পারছেন না।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ও বমদের মঙ্গলের কথা বিবেচনা করে কেএনএফকে অবিলম্বে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। তাঁরা কেএনএফ সদস্যদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘ব্যাংক ডাকাতির সময় লুট ১৪টি সরকারি অস্ত্র সরকারের কাছে ফেরত দিন, কারও প্ররোচনায় হঠকারিতা না করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন।’

এর আগে রোববার বিকেলে বান্দরবান জেলা শহরের উজানিপাড়ায় বম জনগোষ্ঠীর লোকজন একই দাবিতে মানববন্ধন করেন। তাঁরা কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) বর্জনের ঘোষণাও দেন মানববন্ধন থেকে। সাধারণ বম জনগোষ্ঠীর ব্যানারে কেএনএফ কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনার প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে কেএনএফ ব্যাংক ডাকাতি করে। একই সঙ্গে ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র, ৪১৫টি গুলি লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর অস্ত্র উদ্ধার ও কেএনএফ সদস্যদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযানে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন কেএনএফ সদস্য নিহত ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২৫ নারীসহ ৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।