বাংলাদেশের সুষ্ঠু ভোটের প্রতিশ্রুতিতে ভারতের পূর্ণ আস্থা: পররাষ্ট্রসচিব

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারত সফরের আলোচনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন
ছবি: সংগৃহীত

নয়াদিল্লি থেকে ফিরে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে বাংলাদেশের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তাতে ভারতের আস্থা আছে। ভারত মনে করে, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে হস্তক্ষেপ করবে না তারা। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন দেখতে চায় দিল্লি।

বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর ঢাকায় ফিরে আজ রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাসুদ বিন মোমেন। এ সময় ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন তিনি।

বাংলাদেশ ও ভারতের নির্বাচন সামনে, বৈঠকে রাজনীতি নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে—এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দুই দেশের নির্বাচন রয়েছে সামনে, বাংলাদেশেরটা আগে। বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব টু প্লাস টু বৈঠকের (যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক) পর যা বলেছিলেন, সে রকমই বলেছেন। বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারত মনে করে, এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। দেশের সংবিধান ও সাংবিধানিক যে প্রক্রিয়া রয়েছে, সে অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আস্থা দেখিয়েছে ভারত।’

নির্বাচন নিয়ে ভারতের কোনো উদ্বেগ রয়েছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘ভারতের কোনো উদ্বেগ নেই। বাংলাদেশের প্রক্রিয়াগুলোর ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে ভারতের।’ মাসুদ বিন মোমেন জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ও নাশকতায় ব্যবহার করা যেতে পারে, এমন পণ্যের কয়েকটি চালান ধরা পড়েছে—এমন তথ্য দিয়ে ভারতকে আগ্নেয়াস্ত্র ও নাশকতায় ব্যবহার করা যেতে পারে, ভারত থেকে এ ধরনের পণ্যের চোরাচালান বন্ধে জোরদার পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

২৪ নভেম্বর দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু এখানে দূতাবাস নেই, এমন দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে বসেছিলেন পররাষ্ট্রসচিব। সেখানে নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে। কূটনীতিকদের ওই বৈঠক থেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে কোনো রোডম্যাপ জানতে চেয়েছে কি না, সে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, জানতে চায়নি।’

কূটনীতিকদের বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসার আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। ইসির যে গাইডলাইনটি রয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য, তা সবাইকে দেওয়া হয়েছে। কেউ আসতে চাইলে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ। কূটনীতিকেরা আগ্রহ দেখিয়েছেন।

আরও পড়ুন

ভারতের সঙ্গে বৈঠকে পূর্বের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সম্পর্কে সামনের দিনগুলোতে কোন বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পাবে, তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ কীভাবে অন্যান্য দেশ ও সংস্থাগুলো থেকে সহযোগিতার বিষয়টি চিন্তা করছে, তা জানতে চেয়েছে ভারত। বিমসটেক, সব ধরনের কানেকটিভিটি, সীমান্ত হত্যা, তিস্তা নদীর পানিবণ্টন, গঙ্গা চুক্তি, অন্যান্য নদীসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

কনস্যুলার সেবার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখনো ভিসা দিতে একটু দেরি হচ্ছে। তারা জানিয়েছে, লোক নিয়োগ দিয়েছে, আরও নিয়োগ দেওয়া হবে। নৌপথে যাতায়াতের জন্য আলাদা ভিসার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে ভারত।