নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ, একজনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত
ফাইল ছবি

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় নয়জনের বিরুদ্ধে দেওয়া সম্পূরক অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবী আজ বুধবার এই আদেশ দেন।

আদালত এই মামলায় পলাতক আসামি সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করা গেল কি না, সে বিষয়ে প্রতিবেদন আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) এশারত আলী প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, সাজু ইসলাম, রাজীবুল ইসলাম, শহিদুল আলম খান, সিয়াম ও অলি আহমেদ। তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

২০১৮ সালের ৪ আগস্ট রাতে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মদপুরের বাসায় নৈশভোজে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। নৈশভোজ শেষে তিনি গাড়িতে ওঠার সময় হামলার ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় করা মামলায় ২০২১ সালের মার্চে নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছিলেন আদালত। তবে পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ অধিকতর তদন্তের আবেদন করে। আবেদনে বলা হয়, অভিযোগকারীসহ পাঁচজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন আসামি হিসেবে বাদী বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক ইশতিয়াক মাহমুদের নাম উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর নাম উল্লেখ করেননি। তাই প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করতে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। গোয়েন্দা পুলিশ পুনর্তদন্ত করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়।

মার্শা বার্নিকাট ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁকে বহনকারী গাড়ির ওপর হামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বাংলাদেশের কাছে একাধিকবার জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলার ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার এবং এ ব্যাপারে কার্যকর ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছে তারা।

রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার চেয়ে সেই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্রও পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই কূটনৈতিক পত্রে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের সদস্যরা হামলাকারীদের মধ্যে দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন। হামলার সময় ওই দুই ব্যক্তি চিৎকার করে বলছিলেন, বদিউল আলম মজুমদার সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত।

গাড়িবহরের দিকে এগোনোর সময় তাঁদের বাধা দেওয়া হলে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের দুই সদস্যকে ঘুষি মারেন হামলাকারীরা। গাড়িবহর চলে যাওয়ার সময় দুটি গাড়িতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন তাঁরা।

হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সে সময় বাংলাদেশ সরকার বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে বিবৃতি দেয়। তাতে তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।