জামিন পেলেন দুই শিশুর কারাবন্দী মা

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

নাশকতার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন কারাবন্দী হাফসা আক্তার।

মায়ের জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় আজ বুধবারও দাদির সঙ্গে আদালতে আসে দুই শিশু। তাদের বয়স যথাক্রমে চার ও সাত বছর।

মামলায় জামিন হওয়ায় এবং অন্য মামলা না থাকায় হাফসার কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।

মামলায় নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন হাফসা। বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে গত সোমবার ও আজ বুধবার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে আদালত আজ রুলসহ জামিন দেন।

গত সোমবারের শুনানিতে আদালত ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ-সংক্রান্ত ফুটেজ (সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ) রাষ্ট্রপক্ষকে দাখিল করতে বলেছিলেন। পাশাপাশি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে উপস্থিত হতে রাষ্ট্রপক্ষকে বলতে বলা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় পেনড্রাইভে করে ফুটেজ নিয়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তদন্ত কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন আজ আদালতে উপস্থিত হন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। তিনি ভিডিও ফুটেজ-সংবলিত পেনড্রাইভ ও আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি তুলে ধরেন।

জামিন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. মাকসুদ উল্লাহ।

জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় দাদির সঙ্গে হাফসার দুই মেয়ে গত সোমবারের মতো আজও আদালতে (হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের ৩১ নম্বর কক্ষ) আসে।

শুনানির সময় আদালতকক্ষে রাখা সর্বশেষ আসনটিতে দাদির সঙ্গে বসেছিল হাফসার দুই মেয়ে। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের কাকা। জামিন হওয়ার পর এক শিশু বলে, ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

আইনজীবী কায়সার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, অন্য মামলা না থাকায় এই মামলায় জামিন হওয়ায় হাফসার কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই।

গত ২০ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করে পুলিশ। মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিফল হন হাফসা। এরপর জামিন চেয়ে গত রোববার হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। এই মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত বছরের ২৭ নভেম্বর থেকে কারাগারে আছেন হাফসা।

গত ২৯ নভেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন হয়। সেদিন মানববন্ধনে এসেছিল এই দুই শিশু। ব্যানারে আয়োজক হিসেবে লেখা ছিল, ‘রাজবন্দীদের স্বজন’।

দুই শিশুর বাবা আবদুল হামিদ ভূঁইয়া বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দুই শিশুর দাদা আবদুল হাই ভূঁইয়া মানববন্ধনে অভিযোগ করে বলেছিলেন, তাঁর বড় ছেলে আবদুল হামিদ ভূঁইয়াকে পুলিশ খুঁজছে। না পেয়ে ছেলের স্ত্রী হাফসাকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। অথচ হাফসা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন।