৫ লাখ নয় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী
ছবি: প্রথম আলো

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা এবং আহতকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সমিতি আরও বলেছে, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুসারে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। এটি আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সমিতি। তাঁরা আরও বলেছে, এই আইন কার্যকরের পাঁচ বছর হতে চললেও গত তিনদিন আগে মাত্র ১৬২ জনকে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।

আজ শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি মিলনায়তনে এই দাবি জানান বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছেই। প্রতিবছর দেশে ৮০ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছেন। এর মধ্যে ১২ হাজারের বেশি মানুষের বয়স ১৭ বছরের কম। এই হিসাবে গড়ে প্রতিদিন প্রতিবন্ধী হচ্ছেন ২২০ জন মানুষ।

বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) বরাত দিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছে, গত ১০ বছরে দেশের সড়ক-মহাসড়কে নিহত ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছর। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ১৮ শতাংশ শিশু। গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। সমিতি আরও বলেছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দেশে ৪ হাজার ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এতে মারা গেছেন ৩ হাজার ৭২৭ জন। আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৭৮১ জন।

প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটছে বলে জানিয়েছে যাত্রীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি।

রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা কমবে না বলে অভিযোগ করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, যাচাই-বাছাই না করে চালকদের লাইসেন্স দেওয়া হয়ে থাকে। আবার ফিটনেসবিহীন গাড়িতে সয়লাব ঢাকা শহর। পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।

আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদনই করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগী সাতটি পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন।