দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা ও অন্ধত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্বে থাকবে বাংলাদেশ

সেন্ট জনসে গতকাল সোমবার ‘সর্বজনীন চক্ষুসেবা’ শীর্ষক এক আলোচনায় অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা ও অন্ধত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করে যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘ইউনাইটেড নেশনস গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস অন ভিশনের কো-চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের দৃষ্টিবিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ ও ২০২৬ সালে বিশ্ব চক্ষু স্বাস্থ্য সম্মেলনের আয়োজন সমর্থন করে।’

সেন্ট জনস থেকে গতকাল সোমবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথা জানানো হয়েছে।

ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডার রাজধানী সেন্ট জনসে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের চতুর্থ সম্মেলন’–এর ফাঁকে ‘সর্বজনীন চক্ষুসেবা’ শীর্ষক এক আলোচনায় এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্থানীয় সময় গতকাল দুপুরে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব অ্যান্টিগুয়ার মিলনায়তনে এই আলোচনার আয়োজন করে জাতিসংঘের গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস অন ভিশন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বিশ্বব্যাপী চোখের চিকিৎসার উন্নতিতে ২০২১ সালে ‘সবার জন্য দৃষ্টি’ বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ঐতিহাসিক প্রস্তাব গ্রহণ করার ক্ষেত্রে অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা এবং আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক-সামাজিক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য ও বিস্ময়কর অগ্রগতির কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে ২০০টি কমিউনিটি আই সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২৯ সাল নাগাদ আরও ২৫০টি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

‘শুধু তা–ই নয়, প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগে দেশব্যাপী ১৪ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চোখের প্রাথমিক যত্ন ও চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ,’ বলেন হাছান মাহমুদ।

আলোচনায় হাছান মাহমুদ বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সরকারি অবকাঠামোগুলোতে প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করা, তাঁদের শিক্ষা উপকরণের উন্নয়ন এবং ডিজিটাল সাক্ষরতা প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

স্বাগতিক দেশ অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডার পররাষ্ট্র, কৃষি ও বাণিজ্যমন্ত্রী শেত গ্রিন, জাতিসংঘে আয়ারল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি ফারগাল মিথেন, পর্তুগালের স্থায়ী প্রতিনিধি পলা জাকারিয়াস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ওয়ার্নার ওবারমায়ার প্রমুখ আলোচনায় বক্তব্য দেন।

চতুর্থ সিডস সম্মেলনে বাংলাদেশ

প্রতি দশকে একবার আয়োজিত ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের সম্মেলনের (সিডস) চতুর্থ আসরের উদ্বোধনী অধিবেশনে গতকাল যোগ দেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা হাছান মাহমুদ।

তিন দিনের এ সম্মেলনে ৩৯টি সদস্য দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় অভিন্ন স্বার্থের অংশীদার বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন হাছান মাহমুদ। পাশাপাশি ডোমিনিকান রিপাবলিক ও জ্যামাইকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতিসংঘে কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা ছিল তাঁর।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সিডস সম্মেলন শেষে ৩০ মে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। পাশাপাশি দিবসটি উপলক্ষে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের স্থায়ী দূতাবাস আয়োজিত এক যৌথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।

তিন দিনের নিউইয়র্ক সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, শান্তি রক্ষা কার্যক্রমবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত, জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট প্রমুখের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নিউইয়র্কে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেবেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম, পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ সিডস সম্মেলন ও নিউইয়র্কের কর্মব্যস্ত সফরে দেশের প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে যোগ দিচ্ছেন।