ডলু নদের ভাঙনে যেভাবে বিলীন হলো সড়কটি

ডলু নদের ভাঙনে সড়কের একাংশ বিলীন হয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের যান চলাচল। সম্প্রতি লোহাগাড়ার আধুনগর সরদারনী পাড়া এলাকায়ছবি- প্রথম আলো

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ডলু নদের ভাঙনে একটি গ্রামীণ সড়কের ৩০ থেকে ৪০ মিটার অংশ প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। গত সপ্তাহের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়কটিতে ভাঙন দেখা দিতে শুরু করে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন এই গ্রামীণ সড়কের নাম গারাঙ্গিয়া রশিদিয়া সড়ক। সড়কটি দিয়ে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ চলাচল করে।

লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সর্দারনিপাড়া এলাকার পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ডলু নদ। নদের পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত গ্রামীণ সড়কটি। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির ৩০ থেকে ৪০ মিটারে বেশির ভাগ অংশ নদে বিলীন হয়ে গেছে। ১২ ফুট প্রস্থের সড়কটির মাত্র কয়েক ফুট অবশিষ্ট রয়েছে। নদে পানির স্রোত বাড়লে সেটিও যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সর্দারনিপাড়া এলাকায় ডলু নদে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নেই। ইট বিছানো এই গ্রামীণ সড়ক বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সড়কের যে স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে, এর অবশিষ্ট অংশ বিলীন হলে নদের পানিতে আশপাশে অবস্থিত সিপাহিপাড়া, সিকদারপাড়া, বড়ুয়াপাড়া ও সর্দারনিপাড়া প্লাবিত হবে। এলাকার প্রায় ৩০০ বসতঘরও বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

গত বছরও সড়কটির একই অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্লক দিয়ে সেটি সংস্কার করে। তবে ভারী বৃষ্টি ও পানির তীব্র স্রোতে আবারও সড়কটি বিলীন হতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রিদুয়ানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এলাকার ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। ভাঙনের কারণে যান চলাচল বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এক কিলোমিটারের পথ যেতে হচ্ছে চার কিলোমিটার ঘুরে। যাতায়াত খরচও তিন গুণ বেড়েছে।

আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ডলু নদের ভাঙন বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় বিষয়টি জানানো হয়েছে।

লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. ইনামুল হাছান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সম্প্রতি ডলু নদের ওই ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলা প্রকৌশলীকে (এলজিইডি) দ্রুত সড়কটি সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’