যোগাযোগের ঘাটতি বাবা–মায়ের সঙ্গে সন্তানের একধরনের দূরত্ব তৈরি করে। এই দূরত্ব প্যারেন্টিংয়ের জন্য নেতিবাচক। সন্তানের মানসিক গঠনের জন্যও এই দূরত্ব ক্ষতিকারক। কারণ, বাবা–মায়ের আচরণ সন্তানের মানসিক গঠনে প্রভাব ফেলে। তাই বয়ঃসন্ধিকালে সন্তান লালনপালনে মা–বাবাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক পরামর্শ সভায় এ কথা বলেন মনরোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মেখলা সরকার।
প্রথম আলো ট্রাস্টের একটি নিয়মিত আয়োজন বিনা মূল্যে পরামর্শ সহায়তা সভা। আজ এর ১৭৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যেসব ছেলে–মেয়ের মধ্যে একধরনের নাজুকতা আছে, তাদেরই মাদকাসক্তিতে জড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে মনে করেন অধ্যাপক মেখলা সরকার। তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে প্যারেন্টিং একধরনের রোল প্লে করতে পারে।’
বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানের আত্মপরিচয় ও আত্মনির্ভর্শীলতার শুরু হয় বলে উল্লেখ করেন এই মনরোগবিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের মানসিক গঠন কেমন হবে, তার ভিত কিন্তু কিছুটা শৈশব ও কৈশোরের মধ্যে নির্ধারণ হয়ে থাকে।’ সন্তান যখন কৈশোর থেকে বয়ঃসন্ধিকালে পা রাখে, তখন অনেক মা–বাবা সেটা লক্ষ রাখতে পারেন না বলেও মনে করেন অধ্যাপক মেখলা সরকার। সন্তানের সঙ্গে যাতে বাবা–মায়ের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দূরত্ব তৈরি না হয়, তা নিয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
সন্তান কী বলতে চায়, সেটা মা–বাবাকে শুনতে হবে এবং বুঝতে হবে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সরদার আতিক। তিনি বলেন, সন্তান তার মনের কথাগুলো নিজ পরিবারের বাইরে কাউকে বলতে পারে না। আর বললেও সেখানে সমস্যা সমাধান হবে না। কাজেই মা–বাবার অবশ্যই সন্তানকে শুনতে ও বুঝতে হবে।
প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানার সঞ্চালনায় বিনা মূল্যের এই পরামর্শ সভায় সন্তানসহ অনেক অভিভাবক আসেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বয়সী মানুষ পরামর্শ সভায় অংশ নেন। ‘আমাকে কেউ বোঝে না (মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের মনের দূরত্ব)’—এ বিষয়ের ওপর অংশগ্রহণকারীরা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নেন।