উচ্চ ক্ষমতার মোটরসাইকেল চালাতে লাইসেন্স দেওয়ায় কঠোর শর্ত প্রণয়নের নির্দেশ কেন নয়
দেশে ১৬৫ সিসির ওপরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতির আগে চালকের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রুল দেন।
‘মোটরসাইকেলে সর্বোচ্চ মৃত্যুহার দেশে’ শিরোনামে গত বছরের ১৭ জুন প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ তাজরুল হোসেন গত রোববার ওই রিট করেন। স্বরাষ্ট্রসচিব, শিল্পসচিব, বাণিজ্যসচিব, বিআরটিএর চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।
পরে আইনজীবী সৈয়দ তাজরুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দেশে ৩৭৫ সিসির মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সারা দেশে দুর্ঘটনার ৪০ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বলে পত্রিকায় এসেছে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ। যে কারণে ১৬৫ সিসির ওপরে মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি দেওয়ার আগে দুর্ঘটনা এড়াতে বৃহত্তর স্বার্থে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন জরুরি। যে কারণে জনস্বার্থে রিট করা হলে আদালত ওই রুল দিয়েছেন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, মোটরসাইকেল চালিয়ে শেরপুর জেলা শহর থেকে সদর উপজেলার হালগড়া চকবড়ইগাছিতে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন বিজিবির সদস্য মো. ইউসুফ জামিল (২৬)। পথে আমতলী সেতুর ওপর পৌঁছালে তিনি মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন তিনি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক গবেষণা বলছে, প্রতিবছর দেশে প্রতি ১০ হাজার মোটরসাইকেলের বিপরীতে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন ২৮ দশমিক ৪ জন। তাঁদের প্রায় ৪০ শতাংশেরই বয়স ২৪ থেকে ৩০ বছর। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর এই হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। যদিও মাথাপিছু মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীর হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান সবার পেছনে।