ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড
এখনো হলো না নিজস্ব ভবন
বর্তমানে ২০ জন কর্মকর্তা ও অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়া কর্মী আছেন। এ ছাড়া দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন পাঁচজন।
পাঁচ বছর আগে ময়মনসিংহ শহরের খাকডহর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে যাত্রা শুরু হয় ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের। এরপর এখন পর্যন্ত নিজস্ব ভবন করতে পারেনি বোর্ড কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো জনবল নিয়োগ হয়নি এ শিক্ষা বোর্ডে। তবে বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, শিগগির জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আর নিজস্ব ভবনের বিষয়ে তাঁদের ভাষ্য, বিভাগীয় সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন কার্যালয় ও ময়মনসিংহ নতুন শহরের জন্য ব্রহ্মপুত্র নদের চরে জমি অধিগ্রহণ করার পর সেখানে শিক্ষা বোর্ডের নতুন ভবন হবে। কিন্তু নতুন শহরের জমি অধিগ্রহণ কাজ বিলম্বিত হওয়ায় শিক্ষা বোর্ডের নিজস্ব ভবন হচ্ছে না।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের নভেম্বরে এ বোর্ডের অধীন প্রথমবার জেএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর থেকে নিয়মিতভাবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এর আগে গঠিত বোর্ডগুলোর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, শুরুর কয়েক বছর অন্য বোর্ডের অধীন পরীক্ষা নিয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তারা বোর্ড গঠনের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ও পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেছেন। এ ছাড়া দেশের প্রথম শিক্ষা বোর্ড হিসেবে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে প্রবেশপত্র দিচ্ছে তারা। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেছে।
বোর্ডের চেয়ারম্যান গাজী হাসান কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিজের টাকায় জমি কিনে নিজস্ব ভবন করার মতো সক্ষমতা বোর্ডের রয়েছে। কিন্তু ময়মনসিংহ বিভাগীয় নতুন শহর প্রকল্পের পরিকল্পনায় যেহেতু ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড রয়েছে, সে কারণে আমরা আলাদাভাবে জমি কিনতে পারছি না। তবে আমরা প্রশাসনের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের বলেছি, অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বোর্ডের জন্য নির্ধারিত জমির মূল্য আমরা পরিশোধ করতে রাজি আছি। এ ক্ষেত্রে বোর্ডের নিজস্ব ভবন করার জন্য আট একর জমি চাওয়া হয়েছে।’
এ ছাড়া ১২৮ জন স্থায়ী কর্মকর্তা ও আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২২ জন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর এখনো কোনো জনবল নিয়োগ হয়নি। বর্তমানে ২০ জন কর্মকর্তা ও অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়া কর্মী আছেন এ শিক্ষা বোর্ডে। এ ছাড়া দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন পাঁচজন। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশসহ বিভিন্ন কার্যক্রম দেশের অন্যান্য বোর্ডের সঙ্গে সমানতালে করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ময়মনসিংহ বিভাগ হওয়ার পর থেকে বিভাগীয় সদর দপ্তর ও আধুনিক ময়মনসিংহ শহরের জন্য ব্রহ্মপুত্র নদের চর এলাকায় জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শুরুতে অধিগ্রহণের পরিকল্পনায় ছিল প্রায় সাড়ে চার হাজার একর জমি। তবে গ্রামবাসীর আন্দোলনের কারণে সেটি বাতিল হয়। পরে একই এলাকায় সাড়ে ৯ শ একর জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করা হয়। ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডও ওই জমিতে হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস বলেন, নতুন শহরের জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এর মধ্যে বিভাগীয় সদর দপ্তর, শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় থাকবে।