একুশে ফেব্রুয়ারি আবারও বসছে বর্ণমেলা

মাঝেমধ্যে উজ্জ্বল তরুণের দেখা পাই। বিনীতভাবে এসে বলেন, বর্ণমেলায় আমার হাতে খড়ি হয়েছিল। এ রকম এক তরুণীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল নিউইয়র্কেও।

একুশে ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে প্রথম আলোর বর্ণমেলা অনেকের জীবনস্মৃতির অংশ হয়ে আছে। কবছর বিরতির পর এবার আবারও বসছে এই মেলা। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলবে।

বাংলা বর্ণ নিয়ে খুবই সৃজনশীল এ আয়োজন এবার শুধু ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম আলোর আয়োজনে বর্ণমেলায় পৃষ্ঠপোষকতা করছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড মেরিল বেবি। সহযোগিতা করছে সেপনিল, সুপারমম ও এটিএন বাংলা।

এবারও মেলায় শিশু-কিশোরদের জন্য থাকবে কিছু প্রতিযোগিতা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত যেকোনো শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে এ প্রতিযোগিতায়। থাকবে চিত্রাঙ্কন ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতা। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হবে সকাল ৯টায়, হাতের লেখা প্রতিযোগিতা সকাল ১০টায়। আর বর্ণ বানানোর প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পাঠাতে হবে বর্ণ। সহজে নষ্ট হয় না, পছন্দের এমন যেকোনো বস্তু দিয়ে বর্ণ বানিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩–এর মধ্যে পাঠিয়ে দিতে হবে। নিজের নাম, শ্রেণি ও অভিভাবকের মুঠোফোন নম্বরসমেত বর্ণ পাঠানোর ঠিকানা: বর্ণমেলা, প্রথম আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। এসব বর্ণ দিয়েই আয়োজন করা হবে প্রদর্শনীর। প্রতিযোগিতা হবে তিন বিভাগে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ‘ক’ বিভাগ, চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি ‘খ’ এবং সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে ‘গ’ বিভাগের হয়ে।

এ ছাড়া স্কুলপড়ুয়া দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা যেকোনো দেশাত্মবোধক গানের স্থায়ী বা মুখ গেয়ে ১ মিনিটের ভিডিও বানিয়ে ‘বর্ণমেলায় গাও দেশের গান’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ফেসবুক অথবা ইউটিউবে প্রাইভেসি সেটিংস পাবলিক করে ভিডিও উঠিয়ে লিংকটি https://bornomela.palobd.com ওয়েবসাইটে নির্ধারিত অনলাইন ফরমে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে। ভিডিওটিতে (#বর্ণমেলা) অথবা (#bornomela) হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে হবে। সেরা ১০ প্রতিযোগী একুশে ফেব্রুয়ারি বর্ণমেলার মূল অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সুযোগ পাবে। সেই মঞ্চে ১০ জনের মধ্যে সেরা ৫ জন বিজয়ীর জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কার।

অনূর্ধ্ব ১০ বছর বয়সীরা এসো, মাকে একটা চিঠি লিখে ফেলি। মাকে যা বলতে ইচ্ছা করছে, সেই কথাগুলোই লেখো। আর খামের ওপর ‘মায়ের কাছে চিঠি’ লিখে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাঠিয়ে দাও আমাদের ঠিকানায়। বর্ণমেলায় তোমার চিঠির প্রদর্শনী হবে। আর মাকে নিয়ে এসো সেরা চিঠিগুলো মঞ্চে পড়ে শোনাবে তোমরা। থাকবে পুরস্কারও।

বর্ণমেলায় ছোট্ট সোনামণিদের হাতেখড়ি নেওয়ার সুযোগ থাকে। আর এই হাতেখড়ি হবে আলোকিত মানুষদের হাতে। আরও থাকবে ব্রেইল হাতেখড়ি। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে ‘হাতেখড়ি’ আয়োজনটি। এসবের পাশাপাশি দিনব্যাপী বর্ণমেলায় থাকবে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন, যা এ প্রজন্মের সামনে ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে। দেশের সেরা লেখক, শিল্পী, গায়ক, বুদ্ধিজীবীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন অনুষ্ঠানে। যেকোনো প্রয়োজনে ফোন করতে পারো এই নম্বরে: ০১৭১২৩৬৯২০১।

টি-শার্টের নকশা করেছ কখনো? আর সেই আঁকাআঁকি যদি হয় মা–বাবার জন্য, তাহলে কেমন মজা হবে? এবার বর্ণমেলায় তোমার মা–বাবার জন্য টি-শার্টের নকশা করবে তুমি। আর এ টি-শার্ট নিয়ে যাবে সঙ্গে করে। আছে পুরস্কার জেতার সুযোগও। তুমি শখ করে কী জমাতে পছন্দ করো? শখের জমানো পয়সা, ডাকটিকিট, পুরোনো খেলনা কিংবা চিঠির খাম তুমি কি তোমার বন্ধুদের দেখাতে চাও? তাহলে আর দেরি না শখের জিনিসপত্র নিয়ে বর্ণমেলায় এসে প্রদর্শনীতে অংশ নিত পারো। আরও থাকছে প্রিয় বর্ণের নকশায় মেহেদিতে হাত রাঙানোর সুযোগ। এ ছাড়া রং দিয়ে প্রিয় বর্ণে মুখ রাঙিয়ে নিতে পারো।

দিনব্যাপী বর্ণমেলায় থাকবে বর্ণ প্রদর্শনী, বর্ণ মুখোশ, বর্ণ প্রযুক্তি, বর্ণে ডাকটিকিট, বর্ণ আড্ডা, বর্ণ ধাঁধা, বর্ণ আঁকা, মস্ত বর্ণ, খাবারে-কাপড়ে বর্ণ, কাগজের ইশকুল, নাগরদোলা, সিসিমপুর, গুফি ওয়ার্ল্ড, জল পড়ে পাতা নড়ে, ঢাকা পাপেট থিয়েটার, ইকরিমিকরি, জাদু, গানসহ বর্ণ নিয়ে নানা আয়োজন। এ ছাড়া আছে বই বর্ণালি, প্রথমা বইয়ের দুনিয়া, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা এবং মেরিল বেবি বর্ণিল বর্ণ, সুপারমমের বাড়ি, সেপনিল আমার বর্ণ আমার হাতে।