শেখ হাসিনাসহ অন্যদের নামে প্লট বরাদ্দের অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি
বোন শেখ রেহানাসহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগসহ গত ১৫ বছরে (২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে) রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, আইনজীবী জসীম উদ্দীন সরকার ও প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন এই কমিটিতে থাকবেন।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার রুলসহ এ আদেশ দেন। ‘পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প: হাসিনা পরিবারের ৬০ কাঠা প্লট’ শিরোনামে গত ৫ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী আবেদনকারী হয়ে ১১ সেপ্টেম্বর ওই রিটটি করেন। রাজউকের প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দের বৈধতা নিয়ে করা এই রিটে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতিকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। বুধবার রিটের ওপর শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য আজ দিন রাখেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী ও আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।
আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ২৬ হাজার ২১৩টি রাজউকের প্লটের মধ্যে ৮৫৬টি প্লটের বিষয়ে পর্যালোচনায় দেখা যায়, যাদের শুধু ঠিকানা অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও লন্ডন লেখা—এমন অনেকের নামেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অনেকের আইডিতে তথ্য নেই। শুধু যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ লেখা আছে। শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগসহ গত ১৫ বছরে রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১২০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিবকে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
শেখ হাসিনা পরিবারের নামে ৬০ কাঠা প্লটসহ অবৈধ সব প্লট বরাদ্দ বাতিলের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং অবৈধ প্লট বরাদ্দের সঙ্গে জড়িত–সুবিধাভোগীদের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের আওতায় আনতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান রিট আবেদনকারীদের এই আইনজীবী। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউকের চেয়ারম্যান, পূর্বাচল প্রকল্প পরিচালক, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, দুদক চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনকারী ১০ আইনজীবী হলেন মো. রেজাউল ইসলাম, আল রেজা মো. আমির, মো. গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ হারুন, মো. বেলায়েত হোসেন সোজা, কামরুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ খান, শাহীনুর রহমান, মো. জিল্লুর রহমান ও ইসমাইল হোসেন।