জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন নারী: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ রোববার সকালে মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ইউএন উইমেনের অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘ক্ষমতায়ন: জলবায়ুসহিষ্ণু সমাজের জন্য নারী (ফেজ ২)’ প্রকল্প আয়োজিত ‘অ্যানুয়াল কমিউনিটি অব প্র্যাকটিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশন’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে পাঁচ নারী উদ্যোক্তাকে পদক দেওয়া হয়েছে।
বক্তৃতায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় দলিলগুলোর একদম শেষে জেন্ডার নিয়ে একটা অধ্যায় থাকে। কারণ, এটা বলতে হয় দেখে বলে, কিন্তু মনস্তত্ত্বে থাকে না। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ও দুর্দশা মোকাবিলা করতে হয় মায়েদের, অর্থাৎ নারীদের।’
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিলে টাকা দেওয়া উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ঐতিহাসিক দায়। কিন্তু তারা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যে পরিমাণ টাকা দেওয়ার কথা, তা দিচ্ছে না। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাগুলোকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং জাতীয় পর্যায়ের মানুষকে এগুলো সমাধানের কথা ভাবতে অনেক বছর ধরে শেখানো হয়নি। আমরা সঠিক সময়ে ছোট ছোট উদ্যোগ নিই না। পরে বড় সমস্যা মোকাবিলা করতে পারি না।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো–অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের দায় বাংলাদেশের একেবারেই কম। কিন্তু বাংলাদেশকে ভুগতে হয় অনেক বেশি। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় অধিক মাত্রায় কার্বন নিঃসরণকারী দেশের ওপরই। তবে জেন্ডারের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা নিজেদেরই করতে হবে।
ইউএন উইমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ গীতাঞ্জলি সিং বলেন, বাংলাদেশ অনেক আগেই দেখিয়ে দিয়েছে যে তৃণমূলের নারী নেতৃত্বের মাধ্যমেই রূপান্তরশীল অভিযোজন হতে পারে।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘দেশের নারীরাই পারবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সামাজিক সমস্যাগুলো নিরসন করতে।’
অনুষ্ঠানে নারী নেতৃত্বাধীন ৯৭টি সংগঠন নিয়ে ‘উইমেন্স ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয়। পাঁচ নারী উদ্যোক্তাকে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা পদক ২০২৪’ দেওয়া হয়। পদকপ্রাপ্তরা হলেন কুড়িগ্রামের রোশনা খাতুন, কক্সবাজারের রওশন আক্তার, জামালপুরের সুরতি বেগম, রাহিমা খাতুন ও শেফালি খাতুন।