সচিবের নির্দেশে দুই দিনে ৭ চিকিৎসককে বদলি, আতঙ্কে অন্যরা

সচিবালয় ক্লিনিকছবি: সংগৃহীত

সচিবালয় ক্লিনিক থেকে সাতজন চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বদলির আতঙ্কে আছেন। হঠাৎ এই বদলি হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের নির্দেশে।

বদলির ব্যাপারে সচিবালয় ক্লিনিকের একাধিক কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে দুই রকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তারা বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ক্ষুব্ধ হয়ে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলির উদ্যোগ নিয়েছেন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সচিবালয় ক্লিনিকে অনেকে ১০ থেকে ১২ বছর কাজ করছেন। আমি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বলেছি, দীর্ঘদিন যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের পর্যায়ক্রমে বদলি করতে। কিন্তু তাঁরা (সচিবালয় ক্লিনিকের কর্মকর্তারা) বিষয়টির ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।’

সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ‘বাংলাদেশ সচিবালয় ক্লিনিক’ নামে একটি সেবাকেন্দ্র আছে। ক্লিনিকটি যে ভবনে, সেটি ‘ক্লিনিক ভবন’ নামেই পরিচিত। এখানে চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, পিয়নসহ প্রায় ৫০ জন কাজ করেন। ক্লিনিকের কর্মকর্তারা বলছেন, সেবা বিভাগের সচিব নিয়মিত এই ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের দুটো ওষুধ নেন। গত মঙ্গলবার সচিবের দপ্তরের একজন কর্মচারী এলে তাঁকে একটি ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা একেবারেই মিথ্যা। বদলির সঙ্গে ওষুধের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি ওই ওষুধ অনেক বছর ধরেই খাচ্ছি। আর স্বাস্থ্যের সচিব হয়েছি মাত্র কয়েক মাস।’

ওষুধের ঘটনার এক দিন পর, অর্থাৎ ২৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সচিবালয়ের এক চিকিৎসককে কিশোরগঞ্জে বদলি করা হয়। এক দিন পর, অর্থাৎ গতকাল বুধবার আরও ছয় চিকিৎসককে চাঁদপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও রংপুরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বদলি করা হয়। নার্স, ফার্মাসিস্ট ও পিয়নসহ অন্য সবাইকে বদলি করার প্রক্রিয়া চলছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

হঠাৎ বদলির বিষয়ে সচিবালয় ক্লিনিকের একাধিক কর্মকর্তা আজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে দেখা করেছেন। সামন্ত লাল সেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী হয়েছে, আমি ঠিকঠাক জানি না। সচিবের সঙ্গে কথা হলে জানতে পারব। সচিবের সঙ্গে কথা বলার আগে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’