পুলিশ দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থায় বাজে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে

ছাত্র অধিকার পরিষদের ডাকা বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ
ছবি: প্রথম আলো

ছাত্রলীগের দুই নেতার করা মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করেছেন দেশের ২৩ বিশিষ্ট নাগরিক। একই সঙ্গে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সোমবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

গত শুক্রবার বিকেলে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’–এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যার তিন বছর পূর্তিতে ওই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে হামলা করে ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ।

হামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে গিয়েও তাঁদের মারধর করে ছাত্রলীগ। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল থেকে ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের আটক করে শাহবাগ থানা-পুলিশ।

পরে ছাত্রলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন ও আমিনুর রহমান শুক্রবার রাতে শাহবাগ থানায় ছাত্র অধিকারের ২৫ নেতা-কর্মী ও অজ্ঞাতনামা ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেন।

দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার সকালে ছাত্র অধিকারের ২৪ নেতা-কর্মীকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠায় শাহবাগ থানা-পুলিশ। ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

২৩ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা মনে করি, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করার বদলে আহতদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পুলিশ দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থায় একটি বাজে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে। আমরা অবিলম্বে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি দাবি করছি ও তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান আসিফ নজরুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়্যুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক আ ম ম আরিফ বিল্লাহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ম স আ আমিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান, লেখক ও গবেষক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ, লেখক ও গবেষক রাখাল রাহা, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলি, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন ও এহসান মাহমুদ, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, কবি শওকত হোসেন এবং কবি ও লেখক তুহিন খান।