ইভিএম কেনার প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত হতে পারে আগামী সপ্তাহে

নির্বাচন কমিশন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরও প্রায় দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার জন্য প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। আগামী সপ্তাহে এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হতে পারে।

ইসির সভা শেষে ইসি সচিবালয়ের সচিব হুমায়ূন কবির খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘ইভিএমের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। কমিশন অনেকগুলো বিষয় দেখে নির্দেশনা দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি ইভিএমের দাম কত হতে পারে, তার বাজারদর যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছিল। তারা এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি। ওই কমিটি বাজারদর যাচাই করবে। পরবর্তী কমিশন সভায় এটি তুলে ধরা হবে। তখন সব পর্যালোচনা করে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী সোমবার কমিশনের সভায় এই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানান সচিব।

প্রকল্পের ব্যয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হুমায়ূন কবির বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার কমিশন সভা হলে তখন বিস্তারিত জানানো হবে।

রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তাদের হাতে এখন দেড় লাখ ইভিএম আছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব ইভিএম কেনা হয়েছিল। তখন ইভিএম কিনতে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিল ইসি। এখন হাতে থাকা ইভিএম দিয়ে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ভোট করা সম্ভব হবে। এক দিনে ১৫০ আসনে ভোট করতে হলে আরও প্রায় ২ লাখ ইভিএম প্রয়োজন হবে।

ইসি সচিবালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে যে প্রকল্প প্রস্তাবটি তৈরি করা হয়েছে, তাতে মোটা দাগে তিনটি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে আছে প্রায় দুই লাখ ইভিএম কেনা, ইভিএমে সংরক্ষণের ব্যবস্থা এবং ইভিএম-সংক্রান্ত জনবল তৈরি। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার কোটি টাকার বেশি।

নির্বাচন কমিশন প্রকল্প প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করার পর সরকারের অনুমোদনের জন্য এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।

গত আগস্টে ইসির সংলাপে ২২টি রাজনৈতিক দল ইভিএম নিয়ে মতামত দিয়েছিল। এর মধ্যে নয়টি দল সরাসরি ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে। আরও পাঁচটি দল ইভিএম নিয়ে সংশয় ও সন্দেহের কথা বলেছে। কেবল আওয়ামী লীগসহ চারটি দল ইভিএমে ভোট চেয়েছে। বিএনপিসহ যে নয়টি দল ইসির সংলাপ বর্জন করেছিল, তারাও ইভিএমের বিপক্ষে।

সম্প্রতি দেশের ৩৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ইভিএম কিনতে বিপুল ব্যয় কতটুকু যৌক্তিক, তা ভেবে দেখারও অনুরোধ জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা।