নিপীড়নমূলক যেকোনো আইনের বিরুদ্ধে শিল্পীকে সোচ্চার থাকতে হবে: শহিদুল আলম

‘ক্রসফায়ার’ নিয়ে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। ঢাকা, ২৯ জানুয়ারিছবি: শুভ্রকান্তি দাশ

বাংলাদেশে গত ১৫ বছরই শুধু নয়, রাজনৈতিক দলগুলো সব সময়ই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করেছে। রাজনৈতিক গোষ্ঠীর জন্য সুবিধাজনক হলে বিতর্কিত ব্যবস্থাও টিকে গেছে পরের ভিন্ন সরকারের আমলে। এর চূড়ান্ত উদাহরণ ‘র‍্যাব’ গঠন এবং ক্রসফায়ারের মতো বর্বর ঘটনাকে জায়েজ করে তোলা। বুধবার রাজধানীর পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে আয়োজিত ‘ক্রসফায়ার’ শিরোনামে এক দিনের প্রদর্শনীতে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এ কথা বলেছেন।

শহিদুল আলম বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে তৈরি র‍্যাব বিগত সরকারের আমলেও ক্রসফায়ারের নামে নৃশংসতা চালিয়েছে। মানুষকে হত্যা করে নাম দিয়েছে ক্রসফায়ারে মৃত্যু হয়েছে। অথচ ঘটনাস্থলে এর আলামতই ছিল না। সেসব দৃশ্য আলোকচিত্রেও ধরা রয়েছে। তাই আলোকচিত্রী থেকে শুরু করে যেকোনো মাধ্যমের শিল্পীর দায়িত্ব হচ্ছে যেকোনো নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলা।

শহিদুল আলম জানান, ২০১০ সালে বাংলাদেশ পুলিশ ‘ক্রসফায়ার’ আলোকচিত্র প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে রিট করেন তিনি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। প্রদর্শনীটি শেষ দিনে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

বুধবার সন্ধ্যায় শহিদুল আলম নিজে উপস্থিত থেকে দর্শনার্থীদের ঘুরিয়ে দেখান ক্রসফায়ার প্রদর্শনী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আলোকচিত্রী, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা।
ক্রসফায়ার নিয়ে গবেষণা করা তানজিম ইবনে ওয়াহাব, মানবাধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ, দৃকের কিউরেটর এ এস এম রেজাউর রহমান, সংস্কৃতিজন খ ম হারুন, আলোকচিত্রী তানভীর মুরাদসহ অনেকে প্রদর্শনীতে উপস্থিত হয়েছিলেন।

প্রদর্শনী ঘুরে দেখানোর সময় শহিদুল আলম বর্ণনা করছিলেন ক্রসফায়ারের একেকটি মর্মান্তিক ঘটনার পরে আলোকচিত্র ধারণের অভিজ্ঞতার কথা। উঠে আসে বিএনপির আমলে মওদুদ আহমদ, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাহারা খাতুন, আসাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্যে কতভাবে ‘ক্রসফায়ারকে’ বৈধতা দেওয়া হয়েছে, সেসব প্রসঙ্গ।
প্রদর্শনীতে আলোকচিত্রের পাশাপাশি ছিল ভিডিও ও অডিও মাধ্যমের উপস্থাপনা।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক হত্যাকাণ্ড, যশোরের ব্যবসায়ী হারুন-উর-রশীদ, আসলাম হোসেনসহ ক্রসফায়ারে নিহত হওয়া অনেকের নাম ও ছবি।