হবিগঞ্জের এক হাসপাতালের দুই পরিচালকসহ চারজনকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় এক চিকিৎসক ও হবিগঞ্জের দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালের মালিকের দুই ছেলেসহ চারজনকে পুলিশে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আগাম জামিন চেয়ে তাঁদের করা আবেদন খারিজ করে মঙ্গলবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যমতে, চারজন হলেন ওই নারীর অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক এস কে ঘোষ, ওই হাসপাতাল মালিকের দুই ছেলে (পরিচালক) এ কে আরিফুল ইসলাম ও তাবির হোসাইন এবং হাসপাতালের কর্মচারী জনি আহমেদ। আদালত তাঁদের জামিন না দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে পুলিশে সোপর্দ করেন।

রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী রাতে প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে বিকেলে তাঁদের শাহবাগ থানা–পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল হালিম কাফি। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।

আদেশের বিষয়টি জানিয়ে পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালত শুনানিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বলেন, কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক চিকিৎসাসেবার নামে ব্যবসা করছে। এ ধরনের অপরাধ করে কেউ পার পাবে না—সমাজে এমন বার্তা যাওয়া প্রয়োজন, যাতে অন্যরা সতর্ক হয়। চিকিৎসকের উদ্দেশে বলেছেন, তিন দিনের মাথায় এমন গুরুতর রোগীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন। এতে তাঁর অবহেলা রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।’

রাষ্ট্রপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রহীমা খাতুন নামের এক নারী জরায়ুর টিউমার অস্ত্রোপচারের জন্য হবিগঞ্জের দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালে যান। গত ৯ সেপ্টেম্বর ওই নারীর অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক এস কে ঘোষ। ১২ সেপ্টেম্বর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর সর্বশেষ ২ অক্টোবর ওই নারী হাসপাতালে ফলোআপে আসেন। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ২৪ অক্টোবর ওই নারীর এক আত্মীয় হবিগঞ্জ সদর থানায় ওই মামলা করেন। হবিগঞ্জের দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালে অস্ত্রোপচারের সময় ওই নারীর বাঁ পাশের কিডনি ও জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।
এ মামলায় আগাম জামিনের জন্য অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক এস কে ঘোষসহ চারজন মঙ্গলবার আদালতে হাজির হন।

চারজনের আইনজীবী আবদুল হালিম কাফি প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্রোপচারের এক মাস ছয় দিন পর ওই নারী মারা যান। তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে রক্তে ইনফেকশন (সেপটিক) ছিল বলে এম এ জি ওসমানী মেডিকেলের ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ রয়েছে। সিটি স্ক্যান প্রতিবেদনে অঙ্গহানির তথ্য আসেনি।