চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে শোকজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি। আজ শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কারণ দর্শানোর কথা জানায়। সেখানে দুই নেতাকে আগামী সাত দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিটি ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট করা হয়।

কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধারাবাহিক সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ ক্ষুণ্ন হওয়ায় ছাত্রলীগের গঠনতান্ত্রিক কার্যক্রমে ব্যত্যয় হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার উপযুক্ত কারণসহ লিখিত জবাব আগামী সাত দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পরপর দুদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। এতে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর শহীদুল ইসলামসহ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের ১২ জন আহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ জানুয়ারি সাত দিনের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনার লিখিত জবাব চেয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটি।

তবে লিখিত জবাব দেওয়ার পরও বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। ২৩ জানুয়ারি শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা দিতে আসা এক প্রার্থীকে মারধর, ৩০ জানুয়ারি সাবেক নেতাকে নিয়োগ না দেওয়ায় উপাচার্য কার্যালয় ভাঙচুর, শাটল ট্রেন অবরোধ, ৩১ জানুয়ারি রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে হট্টগোল এবং ট্রেন অবরোধের ঘটনা ঘটেছে তাঁদের হাত ধরে।

এ ছাড়া ৭ ফেব্রুয়ারি ‘সিনিয়রের’ সামনে ধুমপান নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। এতে আটজন আহত হয়েছিলেন। এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি সময় মতো খাবার না দিতে পারায় এক দোকানিকে মারধরের অভিযোগ উঠিছিল ছাত্রলীগের উপমুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ইসহাক আলমের বিরুদ্ধে।

সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন শাখা ছাত্রলীগের বিজয় উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা। এ সময় ছাত্রলীগের উপ–আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক নয়ন মোদক ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন। বিবদমান বিজয় উপপক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এর আগে উপপক্ষটি মহান শহীদ দিবসের প্রথম প্রহরে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। এতে ১২ নেতা–কর্মী আহত হয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে  বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক সংগঠনগুলো নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব ছাত্রলীগের না। একটি কুচক্রী মহল নিজেদের স্বার্থে এ সংগঠনগুলোকে জাগিয়ে রাখছে। এরপর ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করছে। তিনি কাল বা পরশু ঢাকা যাবেন। এরপর কেন্দ্রে এসব বিষয় জানাবেন।