প্রশ্নপত্র ফাঁস করে চাকরি হারালেন ৯ জন, বরখাস্ত ১

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে চাকরি থেকে অবসায়ন, একজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও চারজনের নিয়োগের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। ১১, ১২ ও ১৩ জুলাই স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসসংক্রান্ত মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে নাম আসায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২ জুলাই অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ৩০ জনের নাম আসে। তাঁদের মধ্যে আগেই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চাকরি থেকে অবসায়ন করা সংক্রান্ত অফিস আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম। তাঁর স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বিমানের নিরাপত্তারক্ষী মো. আইউব উদ্দিন, এমটি (মোটর ট্রান্সপোর্ট) অপারেটর মো. নজরুল ইসলাম, মো. ফারুক হোসেন, মো. মিজানুর রহমান ও মো. মহসিন আলীকে চাকরি থেকে অবসায়ন করা হয়েছে। অফিস আদেশগুলো অবিলম্বে কার্যকর হবে উল্লেখ করে অবসায়ন করা কর্মীদের আইন অনুযায়ী কোনো পাওনা থাকলে সেটি বুঝে নিতে বলা হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্ত ও চুক্তি বাতিলের পাঁচটি অফিস আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বিমানের পরিচালক প্রশাসন (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন। তাঁর স্বাক্ষরিত অফিস আদেশের মাধ্যমে বিমানের যানবাহন বিভাগের সিডিউলিং সুপারভাইজার মোহাম্মদ মাহবুব আলম শরীফকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিমানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ট্রাফিক হেলপার মো. আবদুল মালেক, মো. আল আমিন, মো. আলমগীর হোসেন ও ক্লিনার তাপস কুমারের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আগে যে ১১ জন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম আসা ৩০ জনের মধ্যে বাকি ৯ জনের (গ্রেপ্তার ও সর্বশেষ শাস্তি পাওয়া ১০ জন ছাড়া) বিরুদ্ধে বিমানের পক্ষ থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২১ অক্টোবর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১০টি পদের লিখিত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে বিমান কর্তৃপক্ষ পরীক্ষাটি স্থগিত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় করা মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তৎকালীন উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। তাইজ ইবনে আনোয়ার প্রেষণে বিমানে নিয়োগ পেয়েছিলেন। অভিযোগপত্রে তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ ১৯ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।