বিইউপিতে প্রথম আলো-গুগলের উদ্যোগে এআই প্রশিক্ষণ পেলেন ৮১ শিক্ষার্থী
গুগলের উদ্যোগে এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হলো ‘ইনফরমেশন ক্রেডিবিলিটি অ্যান্ড এআই লিটারেসি ট্রেনিং’। বিইউপির জেনারেল বেলাল টাওয়ারের সিএইএসআর সেমিনার হলে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৮১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাঁরা আধুনিক এআই টুলস ব্যবহার সম্পর্কে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিইউপির নিরাপত্তা ও কৌশলগত অধ্যয়ন অনুষদের ডিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আলী তালুকদার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদ হাসান তারিক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মালিহা তাবাসসুম এবং প্রথম আলোর কর্মকর্তারা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মুহাম্মদ আলী তালুকদার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা এমন এক সময়ে এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছ, যখন বড় সংখ্যক শিক্ষার্থী অপেক্ষা করছে পরবর্তী প্রশিক্ষণে অংশ নিতে। তোমাদের প্রতি অনুরোধ, চেষ্টা করো প্রশিক্ষণ থেকে সর্বোচ্চটা শিখতে, যেন পেশাগত জীবনে এর কার্যকর ব্যবহার করতে পারো।’
সমাপনী বক্তব্যে মাহমুদ হাসান তারিক বলেন, ‘এ অভাবনীয় উদ্যোগের জন্য গুগল ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ। আমি মনে করি, এ ধরনের প্রশিক্ষণ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনকে আরও সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতাকে আরও বৃদ্ধি করবে।’
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলা সেশনে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক আবদুল কাবিল খান এবং প্রথম আলো ডিজিটাল বিজনেস বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার আ ফ ম খায়রুল বাশার।
পাঁচটি মডিউলে সাজানো দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীরা তথ্য সংগ্রহ, যাচাই, বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন তৈরির পাশাপাশি নোটবুক এলএম, জেমিনি, পিনপয়েন্ট, গুগল ট্রেন্ডসসহ আধুনিক এআই টুলস ব্যবহার সম্পর্কে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
প্রাথমিকভাবে অংশগ্রহণকারীরা এসব এআই টুলের কার্যকারিতার সঙ্গে অপরিচিত ছিলেন। তবে প্রশিক্ষণের পর তাঁদের আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। প্রাথমিক সমীক্ষার তুলনায় প্রশিক্ষণ শেষে সব টুলের সর্বাধিক ব্যবহার শতকরা হারে অনেক বেড়ে গেছে। যেখানে পিনপয়েন্টে আগে ছিল ৩৩ শতাংশ ও পরে ৯২ শতাংশ, গুগল ম্যাপ, রিভার্স ইমেজ ও গুগল লেন্সে আগে ৭১ শতাংশ ও পরে ৯৪ শতাংশ, গুগল ট্রেন্ডসে আগে ৫৬ শতাংশ ও পরে ৯২ শতাংশ, নোটবুক এলএম-এ আগে ৬৪ শতাংশ ও পরে ৯৬ শতাংশ এবং জেমিনিতে আগে ৮৩ শতাংশ ও পরে ৯৭ শতাংশ।
প্রতিটি টুলই প্রশিক্ষণের পর ব্যবহার কয়েক গুণ বেড়েছে, বিশেষ করে জেমিনি ও পিনপয়েন্টস টুলসে সর্বাধিক অগ্রগতি হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্র নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী বলে জানায়।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম নাহিন বলেন, ‘আগে আমরা সাংবাদিকতার বিষয়গুলো হাতে লিখে বা বিভিন্ন আর্টিকেল থেকে নিয়ে করতাম। কিন্তু এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জানতে পেরেছি কীভাবে সাংবাদিকতার সঙ্গে এআইকে যুক্ত করে সাংবাদিকতার সময় সাশ্রয়ী এবং বেশি কার্যকর হতে পারে। আশা করছি এ প্রশিক্ষণ থেকে শেখা প্রতিটি টুলস আমাদের কর্মজীবনে কাজে লাগবে।’
এ উদ্যোগের আওতায় শিক্ষার্থীরা ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি অনুষ্ঠিত সেশনে অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন হলো। বাকি চারটি হলো নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এই প্রশিক্ষণ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুধু সাংবাদিকতার আধুনিক দক্ষতাই অর্জন করবে না, বরং ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট মোকাবিলায়ও সক্ষম হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী আয়োজকেরা।