অন্তর্বর্তী কমিটির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন, সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস

মাহবুব উদ্দিন খোকন (বাঁয়ে) ও রুহুল কুদ্দুসছবি: সংগৃহীত

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (২০২৪-২৫) কার্যনির্বাহী কমিটি হিসেবে সব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৪ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করা হয়েছে। সমিতি মিলনায়তনে আজ রোববার দুপুরে এক তলবি সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। ঘোষণায় এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অন্তর্বর্তী কমিটির সভাপতি ও মো. রুহুল কুদ্দুস সম্পাদক বলে জানানো হয়।

মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহসভাপতি। আর রুহুল কুদ্দুস বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ফোরামের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

‘গত ৬-৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে একতরফা ভোট গণনা শেষে সঠিক ফলাফল ঘোষণা না করায় সঠিক ফলাফল ঘোষণার বিষয়ে তলবি সাধারণ সভা’, এমন ব্যানারে ওই সভা হয়। ব্যানারে নিচে ‘সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীবৃন্দ’ লেখা ছিল। সভার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন সমিতির সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম।

অন্তর্বর্তী কমিটির অপর সদস্যরা হলেন সহসভাপতি মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও সরকার তাহমিনা বেগম, কোষাধ্যক্ষ রেজাউল করিম, সহসম্পাদক মো. মাহফুজুর রহমান ও মো. আবদুল করিম। সাতজন সদস্য হলেন সৈয়দ ফজলে এলাহি, এ বি এম ইব্রাহিম খলিল, ফাতেমা আক্তার, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, মহি উদ্দিন মো. হানিফ ও রাসেল আহম্মেদ।

সমিতির (২০২৪-২৫) নির্বাচনে গত ৬ ও ৭ মার্চ ভোট গ্রহণ হয়। সভাপতি, সহসভাপতি (দুটি), সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সহসম্পাদক (দুটি), সদস্যের ৭টি পদসহ মোট ১৪টি পদে এক বছর মেয়াদের জন্য ওই নির্বাচন হয়ে থাকে। ৭ মার্চ ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা কখন হবে, তা নিয়ে বাদানুবাদ, হট্টগোল ও মারধরের ঘটনায় থমকে যায় গণনা, এরপর মামলা ও মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়া—এমন সব ঘটনার মধ্যে ভোট গ্রহণ শেষের প্রায় ৪৬ ঘণ্টা পর গত ৯ মার্চ বিকেলে ভোট গণনা শুরু হয়। সেদিন দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

এই ফলাফলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের (নীল প্যানেল) প্রার্থী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন সভাপতি এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের (সাদা প্যানেল) প্রার্থী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৪ পদের মধ্যে সভাপতি ও সদস্যের ৩টি পদসহ ৪টি পদে নীল প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হন। অন্যদিকে সহসভাপতির ২টি পদ; সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সহসম্পাদকের ২টি পদসহ সদস্যের ৪টিসহ ১০টি পদে জয় পান সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা। এরপর এই কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে। অবশ্য ভোট গ্রহণের পরপরই জালভোট-কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন নীল প্যানেল হতে সম্পাদক প্রার্থী হওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস।

রফিকুল ইসলামের সই করা তলবি সভার সিদ্ধান্তের ভাষ্য, নির্বাচনে ব্যাপক জালজালিয়াতি কারচুপির প্রমাণ পাওয়া যায়, গ্রেপ্তারের আতঙ্ক দেখিয়ে প্রার্থীদের কেন্দ্রে আসা থেকে বিরত রাখা, ভোট গণনার নাটক সাজিয়ে সব প্রার্থীর নিরপেক্ষ নির্বাচন উপকমিটির অনুপস্থিতিতে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তাই পূর্বে ঘোষিত ফলাফল বাতিল করে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করা হলো।

এই কমিটি অবশিষ্ট মেয়াদ; অর্থাৎ আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানান অন্তর্বর্তী কমিটির সহসম্পাদক মাহফুজুর রহমান।