চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, কমাতে হবে ভোগান্তি

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দেশীয় বিনিয়োগে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বন্দরে নানাভাবে হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, রাসায়নিক পণ্য আমদানির সময় তা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রচুর সময় অপচয় হয়। আবার কাস্টমসের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে সময় বেশি লাগে। এতে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন। ‘দেশীয় বিনিয়োগে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকটির আয়োজক দৈনিক ইত্তেফাক।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের যে সক্ষমতা, তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেন তাঁরা।

বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। সেটি দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগ হতে পারে। কিন্তু বন্দরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থাকতে হবে দেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে। বিদেশি বিনিয়োগ মানেই যে আগ্রাসন, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে তাঁরা বে টার্মিনাল প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরুর দাবি জানান।

বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি নিজেও স্বীকার করেন, চট্টগ্রাম বন্দরে সমস্যা আছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানে কাস্টমসের ছাড়পত্র ছাড়া কিছুই হয় না।

জাহাজে কী মালামাল ওঠে, সব তথ্য তারা জানে। কিন্তু কোনো ঘটনা ঘটলে সবাই চট্টগ্রাম বন্দরকে দায়ী করে। কাস্টমসের জটিলতার কারণে পণ্য ওঠানো বা খালাসে দেরি হয়। এখানে চট্টগ্রাম বন্দর শুধু কুলির দায়িত্ব পালন করে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এটাও ঠিক যে পণ্য ছাড়ানোর জন্য যেসব কাগজপত্র লাগে, ব্যবসায়ীরা তা দিতে পারেন না। তাই কাস্টমসের জটিলতায় পণ্য ছাড়ে দেরি হওয়ার অভিযোগ এখন সস্তা কথায় পরিণত হয়েছে। তবে ডকুমেন্টস দেওয়ার পরও যদি কাস্টমস দেরি করে, তখন আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, রাসায়নিক পণ্য আমদানির পর সেটি পরীক্ষার জন্য বন্দরের নিজস্ব কোনো পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।

সেটি করতে অন্যত্র পাঠানো হয়। তখন ১০ থেকে ১২ দিন সময় চলে যায়। এতে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি ট্রাকের গতি মাত্র ৪০ কিলোমিটার। এত কম গতিতে চলার কারণে বন্দরে পণ্য নিতে অনেক সময় লাগে। মহাসড়ককে সংস্কারের তাগিদ দেন তিনি।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।