অনলাইন নিলামে ৬৪ ধরনের বিদেশি পণ্য, কেনা যাবে ঘরে বসেই

আগ্রহীদের নিলামের পণ্য দেখানো হবে আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবারছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

জুতার সোল বা তলা থেকে শুরু করে পোশাক তৈরির কাপড়, বই থেকে বিনোদন পার্কের যন্ত্র, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ মাপার যন্ত্র অক্সিমিটার থেকে সেলাইয়ের যন্ত্রাংশ, তেঁতুল বিচি থেকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র। ঘরে ব্যবহারের নানা উপকরণ থেকে শিল্পের কাঁচামাল। এ রকম ৬৪ ধরনের পণ্য অনলাইনে নিলামে তুলেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।  

বিদেশ থেকে আমদানির পর খালাস না নেওয়া, জব্দ করা ও বাজেয়াপ্ত হওয়া পণ্য বিক্রির জন্য এই নিলামের আয়োজন করা হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। আগ্রহীদের নিলামের পণ্য দেখানো হবে আজ বুধবার ও কাল বৃহস্পতিবার।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, যে কেউ ঘরে বসে ই-অকশন সফটওয়্যারে নিবন্ধন করে এই নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কোনো ব্যক্তি পণ্য কিনতে চাইলে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র ও হালনাগাদ আয়কর সনদ থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠান হলে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, মূসক নিবন্ধন সনদ ও হালনাগাদ আয়কর সনদ থাকতে হবে। মূলত অংশগ্রহণ বাড়াতে অনলাইন নিলামে তোলা হয়েছে এসব পণ্য।

কাস্টমস জানায়, দরদাতারা কোটেশন মূল্যের ১০ শতাংশ অর্থ জামানত যে কোনো তফসিলি ব্যাংক থেকে ‘কমিশনার, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম’ অনুকূলে পে অর্ডার, ব্যাংক ড্রাফট বা ডিডির কপি অনলাইনে জমা দিলেই হবে। সশরীরে আসতে হবে না।

বাংলাদেশ কাস্টমসের ই-অকশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার ১০৮টি লটে ভাগ করে নিলাম তোলা হয়েছে ৬৪ ধরনের পণ্য। আমদানি মূল্য ও শুল্ক-করসহ এসব পণ্যের দাম বা সংরক্ষিত মূল্য ধরা হয়েছে ৭১ কোটি টাকা। প্রতিটি লটের পাশে সংরক্ষিত মূল্য দেওয়া আছে। পণ্যের বিবরণও রয়েছে তাতে। এসব পণ্য আমদানি হয়েছে এক থেকে আট বছরের মধ্যে। বন্দরের ছাউনি ও কনটেইনারে রয়েছে এসব পণ্য।

তালিকা অনুযায়ী, সবচেয়ে দামি পণ্য হলো বিনোদন পার্কের জন্য আনা যন্ত্রপাতি। মোট ১০টি কনটেইনারে (প্রতিটি ৪০ ফুট লম্বা) প্রায় ৮০ হাজার কেজি ওজনের এসব যন্ত্রপাতি রয়েছে। এই লটের সংরক্ষিত মূল্য হলো ২৭ কোটি টাকা।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, দাম শুনে ভড়কে যাওয়ার কারণ নেই। এই মূল্যে কখনো বিক্রি হবে না। নিয়মানুযায়ী, প্রথমবার নিলামে তোলা হলে সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশ দর পাওয়া গেলে বিক্রির অনুমোদন দিতে পারে নিলাম কমিটি। দ্বিতীয়বার নিলামে তোলা হলে প্রথমবারের চেয়ে বেশি দর পড়লে অনুমোদন দেওয়া যায়। এর পরের নিলামে যেকোনো মূল্যে বিক্রির অনুমোদন দিতে পারে কমিটি। এরপরও যৌক্তিক দাম বিবেচনা করে বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়।  

কোটি টাকার পণ্যের গল্প শোনার যাদের আগ্রহ নেই, তাদের জন্যও নিলামে পণ্য আছে। সবচেয়ে কম দামের পণ্যের কথাই ধরা যাক। তিন ব্যাগ ব্লিচিং আর্থ নিলামে তোলা হয়েছে, যার সংরক্ষিত মূল্য ৫৭০ টাকা। ‘ব্লিচিং আর্থ’ হলো ভোজ্যতেল পরিশোধনের রাসায়নিক। সাধারণ ক্রেতাদের এই পণ্য কেনার আগ্রহ না-ও থাকতে পারে। এক কেজি প্লাস্টিক খেলনাও নিলামে তোলা হয়েছে। সংরক্ষিত মূল্য দেওয়া হয়েছে ৫৭৪ টাকা।

এই তিন পণ্যেও যাদের আগ্রহ নেই, তাদের পছন্দ করার সুযোগ আছে। নিলামে সিরামিকস টাইলস, চেয়ার, কাঠের আলমারি, ওয়ার্ডরোব, গাছের খণ্ড, আর্ট পেপার, নানা ধরনের কাপড়, পোলো শার্ট, হ্যাঙার, পিভিসি রেজিন-এমন অনেক পণ্য রয়েছে।