২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

দূষিত পরিবেশের শৈল্পিক উপস্থাপনা

বরেণ্য শিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর চিত্রকর্ম ঘুরে দেখেন। ধানমন্ডি, ঢাকা ৩০ জুলাইছবি: অগ্নিলা আহমেদ

মাছরাঙা, প্যাঁচা, চড়ুই—কোনোটিরই মুখ দেখা যাচ্ছে না। মাস্কে মুখ ঢেকে আছে! তা ছাড়া উপায়ই বা কী! ধোঁয়া, ধুলায় বাতাস দূষিত। কেবল বাতাস নয়, দূষিত হয়েছে নদী-সমুদ্রের পানি। আসলে চারপাশের পরিবেশই দূষিত হয়েছে। দূষণের ভয়াবহতাকে বাস্তবতা আর কল্পনার মিশেলে শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করলেন তরুণ শিল্পী তামিরা খান।

আজ রোববার বিকেলে ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়কের ইএমকে সেন্টারে শুরু হলো তামিরা খানের প্রথম একক চিত্রকলা প্রদর্শনী ‘সাইলেন্ট সাফারিং: আ ভিজ্যুয়াল ক্রিটিক অব হিউম্যান ইমপ্যাক্ট অন দ্য এনভায়রনমেন্ট’। বরেণ্য শিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য। ইএমকে সেন্টারের পক্ষে বক্তব্য দেন সামাজিক যোগাযোগ কর্মকর্তা সাঈদ মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলাম।

বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) ও শিশির ভট্টাচার্যের সঙ্গে (বাঁ থেকে তৃতীয়) শিল্পী তামিরা খান (ডান থেকে দ্বিতীয়)। ধানমন্ডি, ঢাকা ৩০ জুলাই
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

শিল্পী তামিরা খান বলেন, ঢাকা বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর অন্যতম। চারপাশের দূষণের অবস্থা দেখে তাঁর মনে যে প্রতিক্রিয়া ও উপলব্ধি হয়েছে, সেটাকেই তিনি ক্যানভাসে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিল্পী খন্দকার সারাফ নাহরিন।

প্রদর্শনীতে অ্যাক্রিলিকে আঁকা ৩৫টি চিত্রকর্ম রয়েছে। প্রদর্শনী চলবে আগামী ১২ আগস্ট অবধি। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে।

তামিরা খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে স্বাধীনভাবে শিল্পকলা চর্চা করছেন। এর আগে গত বছর তিনি শিল্পকলা একাডেমির ২৩তম তরুণ শিলকল্পা প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন যৌথ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন।

প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রধান অতিথি বরেণ্য শিল্পী ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী (ডানে) ও বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য। ধানমন্ডি, ঢাকা ৩০ জুলাই
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, তামিরা পরিবেশদূষণের ভয়াবহতা তাঁর চিত্রকর্মে তুলে ধরেছেন। তাঁর শিল্পকর্ম প্রধানত বাস্তব ধারার। প্রচুর উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার ও অঙ্কনের দক্ষতা তাঁর কাজগুলোকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এটি তাঁর প্রথম প্রদর্শনী। যেকোনো নবীন শিল্পীর জন্যই তাঁর প্রথম প্রদর্শনী খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিল্পের পথযাত্রায় এটি সিঁড়ির প্রথম ধাপের মতো। প্রথম প্রদর্শনীর কাজ বিদগ্ধজনের কাছে প্রশংসিত হলে পরবর্তী ধাপগুলো অতিক্রম করে ওপরে ওঠা সহজ হয়। শিল্পী রফিকুন নবী আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে নারী শিল্পীদের পক্ষে বিয়ের পর সংসারের দায়িত্ব সামাল দিয়ে চারুকলা চর্চা অব্যাহত রাখা অনেক সময় সম্ভব হয় না। ফলে অনেক প্রতিভাবান শিল্পী হরিয়ে যান। তামিরার ক্ষেত্রে যেন তা না হয়, সাহস নিয়ে তামিরা অনেক দূরে এগিয়ে যাবে।’

শিশির ভট্টাচার্য বলেন, তামিরা প্রথম বর্ষ থেকেই তাঁর সরাসরি ছাত্রী। বরাবরই নিষ্ঠা ও যত্নের সঙ্গে কাজ করে থাকেন। তিনিও আশা প্রকাশ করে তামিরা তাঁর শিল্পচর্চা অব্যাহত রাখবেন। ভবিষ্যতে আরও অনেক ভালো কাজ তাঁর কাছ থেকে পাওয়া যাবে।