সেবা খারাপ হলেও দাম বেশি নিচ্ছে বিটিসিএল

সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির টানা ক্ষতি। এক দশকে লোকসান অন্তত ২ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে নামমাত্র ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা লাভ।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৈদেশিক কলসেবার খাত আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) থেকে আয় করেছিল প্রায় ৭৬৯ কোটি টাকা। সর্বশেষ অর্থবছর ২০২১-২২ অর্থবছরে এই খাতে ৫২৫ কোটি টাকা কমে আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৪৪ কোটি টাকা।

কর্মকর্তারা বলছেন, ২০০২ সালের আগে বিটিসিএল এককভাবে আইজিডব্লিউ সেবা দিত। ওই বছর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) যাত্রা শুরুর পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও আইজিডব্লিউ সেবার লাইসেন্স দেওয়া হয়। বর্তমানে বিটিসিএল ছাড়াও ২৩টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই সেবা দিচ্ছে। এতে বিটিসিএলের আয় কমেছে।

জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও আইজিডব্লিউ থেকে যেখানে বিটিসিএলের মোট আয়ের ৫৯ শতাংশ আসত, সর্বশেষ অর্থবছরে তা প্রায় অর্ধেক, প্রায় ৩২ শতাংশে নেমেছে।

বিটিসিএলের ২০১৯-২০ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদেশ থেকে আসা কলরেটের মিনিটপ্রতি ন্যূনতম মূল্য ১ দশমিক ৭৫ সেন্ট থেকে শূন্য দশমিক ৬ সেন্টে নেমে আসে; যা বিটিসিএলের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইজিডব্লিউ অপারেটরগুলো সিন্ডিকেট করে বিদেশি কলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছে। আবার ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকলের (ভিওআইপি) কারণেও বৈধ পথে কল আসা কমে যায়। এসব ছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোর মতো বিভিন্ন অ্যাপের কারণে আইজিডব্লিউর ব্যবহার কমায় ক্ষতি হচ্ছে বিটিসিএলের।

আইজিডব্লিউ খাতের মতো বিটিসিএলের অধিকাংশ সেবারই আয় কমেছে। খারাপ সেবার মানও। বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সঞ্জীব কুমার ঘটক বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রথম আলোকে বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতে পুরো প্রযুক্তিই বদলে গেছে। যেসব জায়গায় সমস্যা আছে, সেগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।

১৭০ বছরের পথচলা

ব্রিটিশ ভারতে ১৮৫৩ সালে ডাক ও তার বিভাগের আওতায় ‘টেলিগ্রাফ’ শাখা চালু হয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে এটি ‘পাকিস্তান টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বিভাগ’ নামে আলাদা সরকারি বিভাগ হিসেবে পুনর্গঠিত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বিভাগ’ হয়।
১৯৭৫ সালে এক অধ্যাদেশ বলে এটি ‘টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বোর্ড’ নামে একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ১৯৭৯ সালে আরেক অধ্যাদেশে এটি ‘বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বোর্ড’ (বিটিটিবি) নামে সরকারি বোর্ডে রূপান্তারিত হয়। ২০০৮ সালের ১ জুলাই বিটিটিবিকে বিটিসিএলে রূপান্তর করা হয়।

তলানিতে সেবার মান

বিটিসিএলের অন্যতম উদ্দেশ্য, দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে গ্রাহকসেবার মানোন্নয়ন। স্পিডটেস্ট ডটোনেটের ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তথ্যমতে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতির দিক থেকে বিশ্বের ১৭৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১০৪তম, প্রতিবেশী ভারত ৮১তম। আর মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে ১৪১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২১তম। এ ক্ষেত্রে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে।
বিটিসিএলের আরেকটি উদ্দেশ্য, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডেটা কমিউনিকেশন ও বিভিন্ন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস সুলভে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো।

কেবলডটসিওডটইউকের ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম বেশি। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের জন্য গড়ে খরচ করতে হয় ১৭ দশমিক ৪০ মার্কিন ডলার। একইভাবে ১ জিবি মোবাইল ইন্টারনেটের জন্য খরচ হয় ৩২ সেন্ট বা ৩০ টাকা ৫৯ পয়সা। শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভারতে দুই ক্ষেত্রেই খরচ অনেক কম।

বেসরকারি অপারেটরদের তুলনায় বিটিসিএলের ইন্টারনেটের দাম বেশি। বিটিসিএলের ইন্টারনেট সেবা জিপনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের মোহাইমিনুল ইসলাম নামে এক গ্রাহক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর এক বন্ধু বেসরকারি অপারেটরকে ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট সংযোগের জন্য মাসে ৬০০ টাকায় দেন। একই পরিমাণ ইন্টারনেটের জন্য বিটিসিএলকে তাঁর দিতে হয় ৮০০ টাকা।
 

নামমাত্র লাভ

বেশির ভাগ সেবাই খারাপ হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বিটিসিএল লোকসান দিচ্ছে। তবে সর্বশেষ অর্থবছরে নামমাত্র ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা লাভ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আগের এক দশকে (২০১২ থেকে ২০২১ সাল) টানা অন্তত ২ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে তারা।

কর্মকর্তারা বলেন, করোনাকালে ইন্টারনেটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিটিসিএল লাভে ফিরেছিল। তবে যেসব সেবা ভালো আয় করছিল, সেসবের প্রবৃদ্ধিও থামকে গেছে।

যেসব জায়গায় খারাপ

বিটিসিএলের বেশির ভাগ সেবার মান খারাপ। এর মধ্যে আইজিডব্লিউসহ রয়েছে টেলিফোন, এডিএসএল, ডোমেইন (.bd), ডোমেইন (.বাংলা) ও এমপিএলএস ভিপিএন সেবা।

ধারাবাহিকভাবে কমছে বিটিসিএলের টেলিফোন সেবার সংযোগ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংযোগ ছিল ৬ লাখ ১৬ হাজার, সর্বশেষ অর্থবছর তা ১ লাখ ৩৫ হাজার কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮১ হাজারে।

এডিএসএলের আওতায় টেলিফোন সংযোগের সঙ্গে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়। সব জেলা ও উপজেলায় এডিএসএল সংযোগ থাকলেও করোনাকালে গ্রাহক বাড়েনি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই সংযোগের সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি থাকলেও গত অর্থবছর কমে ১৪ হাজার ৯২টি হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এডিএসএলে ইন্টারনেটের গতি কম।

ভিপিএনের আওতায় ইন্টারনেট বিক্রি কমেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১৫ জিবিপিএস ইন্টারনেট বিক্রি হলেও গত অর্থবছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০৩ জিবিপিএসে।

বিটিসিএলের ডোমেইন (.bd) ও ডোমেইন (.বাংলা) রয়েছে। কয়েক বছর ধরে ব্যাপকভাবে গ্রাহক হারাচ্ছে ডোমেইন (.bd)। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডোমেইন (.bd)-এর প্রায় ৪৮ হাজার গ্রাহক ছিল, সর্বশেষ অর্থবছরে তা কমে হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার।
আবার শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা পায়নি ডোমেইন (.বাংলা)। ২০২০-২১ অর্থবছরে এর গ্রাহক ছিল ৬৫৯। পরের বছর তা কমে দাঁড়ায় ৪৮৭। বিটিসিএলের বাংলা ডোমেইন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগই ব্যবহার করে না। বিটিসিএল ছাড়া মন্ত্রণালয়ের ১০টি সংস্থার কেউই বাংলা ডোমেইন ব্যবহার করে না।

কর্মকর্তারা বলছেন, গুগলে মানুষ বাংলায় কম অনুসন্ধান করে বলে গ্রাহক কম।

লাভজনক সেবায়ও একই অবস্থা

বিটিসিএলের ভালো সেবাগুলোর অন্যতম লিজড লাইন ইন্টারনেট (এলএলআই)। করোনার ব্যাপক সংক্রমণের বছর (২০২০-২১) এলএলআই আগের বছরের তুলনায় ১৪৮ জিবিপিএস বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় বেশি বিক্রি হয় মাত্র ২৯ জিবিপিএস।

সারা দেশে ৩৪ হাজার ১০০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) করেছে বিটিসিএল। মোবাইল অপারেটরদের কাছে এনটিটিএনের ট্রান্সমিশন সেবা বিক্রি করেও লাভ করে সংস্থাটি।

বিটিসিএলের উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা জিপনের গ্রাহক ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮০৯ থাকলেও সর্বশেষ অর্থবছরে বেড়ে ৩৬ হাজার ১৭০ হয়েছে। তবে মোট গ্রাহকের তুলনায় এটা সামান্য।

বছরখানেক আগে বাসায় জিপন সংযোগ নেন বরিশালের সাগরদী বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. হাসিব আহমেদ। গত বছরের মাঝামাঝি এক বৃহস্পতিবার রাতে সংযোগ তার কেটে যায়। তিন দিনের মাথায় লাইনম্যানদের ৩০০ টাকা ঘুষ দিয়ে তিনি সংযোগ নেন বলে অভিযোগ করেন।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল আলাপ সেবা বাজারে আনে বিটিসিএল। আলাপ থেকে আলাপ বা অন্য আইপিটিএসপি অপারেটরে কল করলে টাকা লাগে না। আলাপ থেকে অন্য লোকাল অপারেটরে কল করলে প্রতি মিনিট ৪০ পয়সা খরচ হয়। যাত্রা শুরুর প্রথম তিন মাসে ৮ লাখ ৫৩ হাজার গ্রাহক নিবন্ধন করেন। ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে আলাপের গ্রাহক দাঁড়ায় ৮ লাখ ৫৭ হাজারে। পরের অর্থবছরে গ্রাহক হয় ৯ লাখ ২৫ হাজার। শুরুতে অ্যাপটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেলেও তা থমকে গেছে।

ফার্মগেট এলাকার ইব্রাহীম খালিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাত্রা শুরুর কয়েক মাস পর থেকে প্রচুর কলড্রপ শুরু হয়। গ্রামে কথাই বলা যায় না। আর আলাপ টু আলাপ কথা বলতে হলে দুই পক্ষেরই ইন্টারনেট লাগে। তার চেয়ে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলা ভালো। শুরুতে আলাপ ব্যবহার করতাম, এখন করি না।’

গুগলে দেখা যায়, আলাপ অ্যাপ ১০ লাখ ডাউনলোড হয়েছে। অ্যাপে প্রায় ২৮ হাজার মন্তব্য এসেছে। প্রথম ১০টি মন্তব্যের সবই নেতিবাচক।

সক্ষমতা আছে, গ্রাহক কম

বিটিসিএল লাভে আসার অন্যতম কারণ ইন্টারনেট ব্যবসায় আয় বৃদ্ধি। তবে ইন্টারনেট সেবা বিক্রিতে আধিপত্য বেসরকারি খাতেরই।

বিটিআরসির ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ইন্টারনেট গ্রাহক প্রায় ১২ কোটি ৪৪ লাখ। এর মধ্যে মুঠোফোনে গ্রাহক ১১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার। এতে বিটিসিএলের সরাসরি গ্রাহক নেই। আইএসপি ও পিএসটিএন ইন্টারনেট গ্রাহক প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ। এর মধ্যে গত অর্থবছরে বিটিসিএলের জিপন ও এডিএসএলের গ্রাহক ছিল ৫০ হাজার ২৬২। আর এলএলআই ও ভিপিএনের মাধ্যমে ইন্টারনেট বিক্রি হয়েছে ৫৮১ জিবিপিএস।

টেলিযোগাযোগ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো রয়েছে বিটিসিএলের। সক্ষমতা থাকলেও বেসরকারি খাতের তুলনায় তাদের গ্রাহক খুবই কম।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতের সব সেবাই বিটিসিএলের রয়েছে। কিন্তু খুব কম মানুষই তাদের সেবা নেন।

২১৪৫ কোটি টাকা খোয়াচ্ছে বিটিসিএল

বিটিসিএলের গত বছরের জুনের নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩ হাজার ১১০ কোটির বেশি টাকা আদায় করতে পারছে না। এর মধ্যে ২ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা মন্দ পাওনা হয়ে গেছে। অর্থাৎ আদায় না–ও হতে পারে। বাকি প্রায় ৯৬৬ কোটি টাকা ২০২১-২২ অর্থবছরে আদায় হয়নি।
এই বকেয়া অর্থের মধ্যে স্থানীয় অপারেটরদের কাছে প্রায় ৭৭২ কোটি, বিদেশি অপারেটরদের কাছে ১ হাজার ২২৭ কোটি, স্থানীয় গ্রাহকদের কাছে ৮৬০ কোটি এবং সরকারি-বেসরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছেও কয়েক শ কোটি টাকা রয়েছে।  

সেবা গ্রহণে হয়রানি

চট্টগ্রাম নগরের বালুচড়া এলাকার মোহাইমিনুল ইসলাম গত বছরের নভেম্বর ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার কিছুদিন পর লাইন কেটে যায়। পাঁচ দিন পর তিনি সেই সংযোগ ফিরে পান। মোহাইমিনুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক কর্মকর্তাকে শুক্র বা শনিবার ফোন করে জিজ্ঞেস করি, ‘সমস্যা ঠিক হবে কবে?’ ছুটির দিনে ফোন দেওয়ায় বিরক্ত হয়ে সেই কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি মানসিক রোগী নাকি।’
বিটিসিএলের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক মো. অহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘খারাপ আচরণের অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
বেসরকারি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিটিসিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেয়ে বেসরকারি অপারেটরদের কর্মীদের ব্যবহার ভালো। বিটিসিএলের ইন্টারনেট সংযোগ পেতে আবেদন করাসহ নানা প্রক্রিয়া অনুসরণের পরও গ্রাহকদের কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়। বেসরকারি অপারেটর একদিনেই সংযোগ দেয়। বিটিসিএলের সেবা শুক্র ও শনিবার মেলেই না। বেসরকারি ইন্টারনেট সংযোগ নিতে কাউকে ‘বকশিশ’ দিতে হয় না। বেসরকারি ইন্টারনেট তুলনামূলক সস্তা। এসব কারণে বেসরকারি ইন্টারনেট বেশি নেন গ্রাহকেরা।
দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিটিসিএলের সাপোর্ট সার্ভিস ভালো না। মানুষের ২৪ ঘণ্টা সেবা লাগে। সেই সেবা দেওয়ার লোকবল তাদের নেই।

ভালো সেবাই মূল চ্যালেঞ্জ

বিটিসিএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইন্টারনেট সেবায় জোর দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করেছিলাম। এখন মূল চ্যালেঞ্জ তা আরও বাড়ানো এবং ভালো সেবা দেওয়া।