পণ্যের জিআই নিয়ে তৎপর হতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারিছবি: পিআইডি

বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়ে তৎপর হতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত ও প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পণ্যের জিআই নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তৎপর হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘সবাই তৎপর হয়ে আমাদের যেসব পণ্য আছে, সেগুলোর জিআই স্বীকৃতি যেন করে ফেলা হয়।’

সম্প্রতি যে তিনটি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দিয়ে জার্নাল প্রকাশ করা হয়েছে, সেই জার্নালের কপি মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এই তিনটি পণ্য হলো টাঙ্গাইলের শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা।

পণ্যের জিআই স্বীকৃতি নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকলে সে বিষয়টি যেন সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থায় দ্রুত উপস্থাপন করা হয়, সে বিষয়েও নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

আরও পড়ুন

মন্ত্রিসভার বৈঠকে  টাঙ্গাইলের শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার জিআই সনদ এবং টাঙ্গাইল শাড়ি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে হস্তান্তর করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে টাঙ্গাইল শাড়ি হস্তান্তর করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা। ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি
ছবি: পিআইডি

মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের তিন মাসের মধ্যে সিটি নির্বাচন

মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) আইন ২০২৪’–এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিলটি সংসদে পাস হলে জাতীয় নির্বাচনের মতো সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনও (ভোট) হবে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের তিন মাসের (৯০ দিন) মধ্যে।

বর্তমান আইন অনুযায়ী, সিটি করপোরেশনের মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। আর কোনো সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ছয় মাসের (১৮০ দিন) মধ্যে ভোট গ্রহণ করার নিয়ম রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই আইনের খসড়াটি গত বছরের অক্টোবরে মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু প্রক্রিয়া শেষ করে সংসদে উপস্থাপনের জন্য পাঠানো যায়নি। এ জন্য এটি আবারও মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয় এবং অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রস্তাবিত আইনে নির্বাচিত মেয়র শপথ নেওয়ার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম সভা আহ্বান করবেন এবং যেদিন করপোরেশনের সভা আহ্বান করবেন, সেদিন থেকে নতুন মেয়াদ কার্যকর হবে। মেয়াদ হবে ৫ বছর। বর্তমান আইনে বিভিন্ন ধরনের ১৪টি কমিটি করার বিধান রয়েছে। এখন নতুন করে আরও সাতটি কমিটি যোগ হবে।

প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার (বৃষ্টিজনিত পানি) কাজটি ওয়াসা থেকে সিটি করপোরেশনের কাছে চলে আসবে। এটিকে প্রস্তাবিত আইনের মধ্যে আনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি
ছবি: পিআইডি

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে সিটি করপোরেশনগুলো জলাবদ্ধতা বা জলজট নিরসনে অবকাঠামো উন্নয়ন, পাম্প নির্মাণ, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনগুলো নিজ নিজ ওয়ার্ডের মশকমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

বর্তমান আইনে কোন এলাকা সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত হবে, তা তফসিলভুক্ত করা হয়। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে তফসিলভুক্ত না করে সরকার গেজেট দিয়ে তা নির্ধারণ করতে পারবে।

মেয়র ও কাউন্সিলরদের বছরের ছুটি কমানো হচ্ছে। এখন মেয়র ও কাউন্সিলরেরা বছরে তিন মাস পর্যন্ত ছুটি ভোগ করতে পারেন। প্রস্তাবিত আইনে তা করা হয়েছে বছরে এক মাস। আগে কোনো কারণে কোনো কাউন্সিলরের পদ শূন্য হলে পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের ওই সময়ের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হতো। এখন শূন্য হলে সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরকে এই দায়িত্ব দিতে হবে। সিটি করপোরেশনের সচিবের পদের নাম পরিবর্তন করে ‘নির্বাহী কর্মকর্তা’ করা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে শ্রম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০২৪–এর খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন