প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা
আসামির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ও লুটের টাকায় কেনা ফ্রিজ, টিভি উদ্ধার
প্রথম আলো কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের একজন মো. নাইম ইসলামের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৫০ হাজার টাকা এবং লুণ্ঠিত টাকা দিয়ে কেনা একটি ফ্রিজ ও টিভি উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক আবদুল হান্নান তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে রাখতে আদালত বরাবর করা আবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করেন।
প্রথম আলো কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ১৫ জনকে কারাগারে রাখার আবেদন করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর এ বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলাটি করা হয় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে।
যেসব আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে, তাঁরা হলেন মো. নাইম ইসলাম (২৫), মো. সাগর ইসলাম (৩৭), মো. আহাদ শেখ (২০), মো. বিপ্লব (২০), মো. নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ (২০), মো. জাহাঙ্গীর (২৮), মো. সোহেল মিয়া (২৫), মো. হাসান (২২), মো. রাসেল (২৬), মো. আবদুল বারেক শেখ ওরফে আলামিন (৩১), মো. রাশেদুল ইসলাম (২৫), মো. সাইদুর রহমান (২৫), আবুল কাশেম (৩৩), মো. প্রাপ্ত সিকদার (২১) ও মো. রাজু আহমেদ (৩৩)।
কারাগারে আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, তদন্তকালে এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও সোর্সদের কাছ থেকে পাওয়া সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই আসামিদের একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ১ নম্বর আসামি মো. নাইম ইসলামের (২৫) কাছ থেকে লুণ্ঠিত নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং লুণ্ঠিত অর্থ দিয়ে কেনা ১টি ফ্রিজ, ১টি এলইডি টিভি উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। আসামিদের নাম–ঠিকানা যাচাই–বাছাই প্রক্রিয়াধীন। এ অবস্থায় মামলার তদন্ত সমাপ্ত ও আসামিদের ঠিকানা যাচাই–বাছাই না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের জেলহাজতে আটক রাখা প্রয়োজন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার আসামিদের জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
মামলায় দাঙ্গা সৃষ্টি করে অবৈধভাবে কার্যালয়ে ঢুকে লুটপাট, ক্ষতি করা, হত্যার উদ্দেশ্যে অগ্নিসংযোগ, ভয় দেখানো, অপরাধের প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ করা হয়। পাশাপাশি প্রথম আলো পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ ও অফিসের কাজে বাধা দিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, অনলাইনে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নির্দেশনা দেওয়া ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজের অভিযোগ আনা হয়েছে।
হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় শুধু লুটপাট করা সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এজাহারে প্রথম আলো আরও জানিয়েছে, সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা।
মামলার এজাহারে প্রথম আলো জানিয়েছে, এই হামলার সিসিটিভি ফুটেজ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।