রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতায় বাংলাদেশ ‘আংশিক স্বাধীন’

রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতায় বাংলাদেশ ‘আংশিক স্বাধীন’। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউসের করা বৈশ্বিক স্বাধীনতার সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এ অবস্থানে রয়েছে। এ নিয়ে ২০১৯ সাল থেকে টানা পঞ্চমবার বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত রইল।  

বৃহস্পতিবার ফ্রিডম হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। ‘বিশ্বে ২০২৪ সালে স্বাধীনতা: ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন ও সশস্ত্র সংঘাতের অপরিসীম ক্ষতি’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতায় বাংলাদেশের সম্মিলিত স্কোর ৪০। এর মধ্যে রাজনৈতিক অধিকারচর্চার ক্ষেত্রে স্কোর ১৫, নাগরিক স্বাধীনতায় ২৫। এ দুই ক্ষেত্রে আগের বছরেও বাংলাদেশের স্কোর অভিন্ন ছিল।


মোট ১৯৫টি দেশ ও ১৫টি অঞ্চল নিয়ে ফ্রিডম হাউসের স্বাধীনতার সূচক তৈরি করা হয়েছে। রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে এসব দেশ ও অঞ্চলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে—‘স্বাধীন’, ‘আংশিক স্বাধীন’ ও ‘স্বাধীন নয়’। এ বছরে সূচক অনুযায়ী, ৮৩টি দেশ স্বাধীন, ৫৬টি দেশ আংশিক স্বাধীন এবং ৫৬টি দেশ স্বাধীন নয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ১৮ বছর ধরে বৈশ্বিক স্বাধীনতা নিম্নমুখী। এ বছর ৫২টি দেশে রাজনৈতিক অধিকারচর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতা কমেছে। বিপরীতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে মাত্র ২১টি দেশে। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন ও সশস্ত্র সংঘাত মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করেছে, বিপদের মুখে ফেলছে। বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা সহিংসতা ও বিরোধীদের বর্জনের কারণে বাধার মুখে পড়েছে।

২০২৪ সালে স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমার ছাড়া সবাই ‘আংশিক স্বাধীন’। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৬ স্কোর করেছে ভারত। এরপর ভুটানের ৬৩, নেপাল ৬২, শ্রীলঙ্কা ৫৪ ও পাকিস্তান ৩৫ স্কোর করেছে। ৮ স্কোর নিয়ে ‘স্বাধীন নয়’ তালিকায় রয়েছে মিয়ানমার। সূচকে সর্বোচ্চ ১০০ স্কোর ফিনল্যান্ডের। সবচেয়ে কম ১ স্কোর পাওয়া দেশ হলো সিরিয়া।


ফ্রিডম হাউসের সর্বশেষ প্রতিবেদনে গত ১০ বছরে স্বাধীনতার অবনতি হয়েছে, এমন দেশ ও অঞ্চলগুলোকে নিয়ে একটি তালিকা করেছে। ওই তালিকায় বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, রাশিয়া, তুরস্ক ও মিসরসহ বেশ কয়েকটি দেশের নাম রয়েছে। তালিকায় থাকা অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের কাশ্মীর, আজারবাইজানের নাগারনো–কারাবাখ ও হংকং।

ফ্রিডম হাউস বৈশ্বিক স্বাধীনতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতাকে বিবেচনায় নেয়। রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও স্বচ্ছতা, রাজনৈতিক বহুত্ববাদ ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ, সরকারের কার্যকারিতা, নীতিনির্ধারণী ব্যবস্থা, ক্ষমতার ব্যবহার ও স্বচ্ছতা-সম্পর্কিত নানা বিষয়। অন্যদিকে নাগরিক স্বাধীনতার মধ্যে রয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিশ্বাস, মানবাধিকার সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা, আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থা, ব্যক্তিস্বাধীনতা।