জার্মানির বিনিয়োগ টানতে সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ

জার্মানির সংসদীয় প্রতিনিধিদল গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম টোস্টারের বাসায় দেশের নাগরিক সমাজের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন
ছবি: সংগৃহীত

ভবিষ্যতে জার্মানি থেকে আরও বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হলে স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে জার্মানির সংসদীয় প্রতিনিধিদল। চার দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে শনিবার জার্মানির পার্লামেন্টে দক্ষিণ এশীয় সংসদীয় দলের সভাপতি রেনাটা কানেস্ট এ কথা বলেন। তিনি সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশ সফরকারী প্রতিনিধিদলের নেতা রেনাটা কানেস্ট বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার নিরিখে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ যদি মানবাধিকার এবং আইএলও সনদ বাস্তবায়ন করে, তবে আরও উন্নতি করবে। বাংলাদেশে আরও বেশি জার্মান বিনিয়োগ কীভাবে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেসব ক্রেতা বা ব্র্যান্ড এখানে আসবে, তারা ভালো পরিবেশ চায়, ভালো ভাবমূর্তি চায়। সমাজে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বারবার সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি।

জার্মানির সাবেক মন্ত্রী রেনাটা কানেস্ট বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের কাজের পরিবেশের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। উন্নতির এ ধারা অব্যাহত রাখতে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি।

বাংলাদেশ সফরে রেনাটা কানেস্টের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

নাগরিক সমাজের অবাধে কাজ করা জরুরি

জার্মানির সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থে নাগরিক সমাজের সক্রিয়ভাবে এবং অবাধে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ছয় সদস্যের জার্মানির সংসদীয় প্রতিনিধিদল গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম টোস্টারের বাসায় দেশের নাগরিক সমাজের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। জার্মান পার্লামেন্ট বুন্দেসটাগের এই সদস্যরা বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাজের ক্ষেত্র নিয়ে ব্যাপক পরিসরে আলোচনা করেন।

গতকাল রাষ্ট্রদূত আচিম টোস্টার এক টুইটে এ তথ্য জানান। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, আর্টিকেল-১৯-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ফারুক ফয়সালসহ অন্যরা ছিলেন। মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, দুই পক্ষ খোলামেলাভাবে আলোচনা করেছে এবং একে অন্যের কথা শুনেছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ওই মতবিনিময় সভায় মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে এখানকার সর্বশেষ পরিস্থিতি শোনার পর জার্মানির সংসদীয় দলটি তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি নাগরিক সমাজের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়াটা উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।